বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪ | ১৪ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বাঙালির আনন্দের দিন ‘মহান বিজয় দিবস’

উৎপল কুমার মোহন্ত, বগুড়া
১৬ ডিসেম্বর ২০২০ ০৫:২৩ |আপডেট : ১৬ এপ্রিল ২০২১ ০০:১৩
এমনি এক দিনের প্রতীক্ষায় কেটেছে বাঙালির হাজারো বছর
এমনি এক দিনের প্রতীক্ষায় কেটেছে বাঙালির হাজারো বছর

বাঙালি জাতির জীবনে এক আনন্দের দিন মহান বিজয় দিবস। এমনি এক দিনের প্রতীক্ষায় কেটেছে বাঙালির হাজারো বছর। বহু কাঙ্ক্ষিত সেই দিনের দেখা মিলেছিল ইতিহাসের পাতায় রক্তিম অক্ষরে লেখা এক সংগ্রামের শেষে ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর। ঢাকার ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানে (বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ৪৮ বছর আগের এদিনে বর্বর পাকিস্তানি বাহিনী হাতের অস্ত্র ফেলে মাথা নিচু করে দাঁড়িয়েছিল বিজয়ী বীর বাঙালির সামনে। স্বাক্ষর করেছিল পরাজয়ের সনদে। পৃথিবীর মানচিত্রে অভ্যুদয় ঘটেছিল স্বাধীন বাংলাদেশের।

দীর্ঘ নয় মাস রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে ৩০ লাখ শহীদের আত্মত্যাগ, দুই লাখ মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে অর্জিত এই বিজয়ের দিনটিতে আনন্দের পাশাপাশি বেদনাও বাজবে বাঙালির বুকে। বিনম্র শ্রদ্ধা ও গভীর কৃতজ্ঞতায় জাতি স্মরণ করবে জানা-অজানা সেসব শহীদকে। যাদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতার সুফল ভোগ করে পেরিয়ে গেল ৪৮ বছর। কিন্তু যারা সেই সংগ্রামের উত্তাল দিনে জাতির সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করে হাত মিলিয়েছিল ঘাতক পাকিস্তানি সেনাদের সঙ্গে, সেই রাজাকার-আলবদরদের বিচার না করার কলঙ্ক যেন অনেকটাই ম্লান করেছিল জাতির এই শ্রেষ্ঠ অর্জনকে। দিনে দিনে গণদাবিতে পরিণত হয়ে ওঠা যুদ্ধাপরাধীদের বিচারকাজ অবশেষে শুরু হয়েছিল স্বাধীনতার মাস ২০১০ সালের মার্চে। যুদ্ধাপরাধীদের ফাঁসি কার্যকর করায় সেই কলঙ্কের দায় থেকে মুক্তির সূচনা ঘটেছে। জাতির বিজয়ের আনন্দে যুক্ত হয়েছে নতুন মাত্রা।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় দেশ গড়া, দারিদ্র্য ও দুর্নীতি থেকে মুক্তির সংগ্রামের পাশাপাশি একইভাবে চলেছে সামরিক ও স্বৈরশাসন বিরোধী গণতন্ত্রের জন্য সংগ্রাম, যুদ্ধাপরাধের বিচার, মৌলবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা প্রতিরোধ আন্দোলন। এসব আন্দোলন-সংগ্রামের মধ্যেই মোকাবিলা করতে হয়েছে প্রবল বন্যা, ভয়াবহ ঘূর্ণিঝড় ও জলোচ্ছ্বাসের মতো প্রাকৃতিক দুর্যোগের। এই বন্ধুর পথপরিক্রমায় অনেক ত্যাগ স্বীকার করতে হয়েছে। কিন্তু শত বাধা-প্রতিবন্ধকতাতেও হতোদ্যম হয়নি এ দেশের মানুষ। হারায়নি সাহস। লাল-সবুজ পাতাকা উড়িয়ে অব্যাহত আছে বাঙালির এগিয়ে যাওয়া।

১৬ ডিসেম্বর সকাল থেকেই সারা দেশে পথে নামবে উৎসবমুখর মানুষ। শহীদদের স্মরণ করে বিনম্র শ্রদ্ধায় দেশের সব স্মৃতিসৌধ ভরিয়ে দেবে ফুলে ফুলে। রাজধানীতে সব বয়সী অগণিত মানুষ সমবেত হবে সভারে জাতীয় স্মৃতিসৌধে। শ্রদ্ধার ফুলে ঢেকে যাবে সৌধের বেদি।

লাল-সবুজ পতাকা উড়বে বাড়িতে ও গাড়িতে, সব প্রতিষ্ঠানে। মাথায় থাকবে পতাকার রঙে রাঙা ফিতা। পতাকার রঙের পোশাকও থাকবে উৎসবে শামিল অনেকের পরনে। পতাকায় সজ্জিত করা হবে রাজধানীসহ দেশের বড় শহরগুলোর প্রধান সড়ক ও সড়কদ্বীপ। থাকবে সরকারি ছুটি। রাতে গুরুত্বপূর্ণ ভবনে করা হবে আলোকসজ্জা। হাসপাতাল, শিশুসদন ও কারাগারগুলোতে পরিবেশন করা হবে বিশেষ খাবার।



মন্তব্য করুন