শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪ | ১৫ চৈত্র ১৪৩০ বঙ্গাব্দ

বিএনপি কার্যালয়ে কাউকে ঢুকতে না দেওয়ার কারণ জানাল পুলিশ

নিজস্ব প্রতিবেদক
৮ ডিসেম্বর ২০২২ ০৮:০২ |আপডেট : ৯ ডিসেম্বর ২০২২ ০৭:৪০
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার
ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার

পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের গতকালের সংঘর্ষের পর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কাউকে ঢুকতে দিচ্ছে না পুলিশ। এই সংঘর্ষের পর নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে বিএনপির কার্যালয়মুখী সড়ক বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে যেতে চাইলে পুলিশের বাধার মুখে নাইটিঙ্গেল মোড় থেকে ফিরে আসতে হয় তাকে।

বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে কেন কাউকে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে না, এ ব্যাপারে সাংবাদিকদের বিস্তারিত জানান ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার।

তিনি বলেন, ‘এটা ক্রাইম সিন। কালকে এই অফিস (বিএনপি কার্যালয়) থেকে আমাদের পুলিশ সদস্যদের লক্ষ্য করে অনেক বোমা নিক্ষেপ করা হয়েছে, ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে। পরবর্তীতে আমরা তাদের এখানে অভিযান চালাতে বাধ্য হই এবং একপর্যায়ে তাদের সবাইকে সরিয়ে দিয়ে অফিসের ভেতরে অভিযান পরিচালনা করি। সেখান থেকে আমরা প্রচুর পরিমাণ ককটেল এবং নাশকতা চালানোর মতো অনেক উপাদান আমরা জব্দ করি। সো এটি আমাদের দৃষ্টিতে একটি ঘটনাস্থল। যেটিকে আমরা প্লেস অব অকারেন্স বলে থাকি পুলিশের ভাষায়।’ 

ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার আরও বলেন, ‘আমাদের সিআইডির ক্রাইম সিন ইউনিট এখানে এসে কাজ করবে, ডগ স্কোয়াড কাজ করবে। এখানে আমাদের কাজ শেষ না হওয়া পর্যন্ত এখানে কেউ প্রবেশ করতে পারবে না।’

১০ তারিখ বিএনপির নির্ধারিত গণসমাবেশের আগে কাজ শেষ হবে কি না—সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের উত্তরে বলেন, ‘নির্দিষ্ট কোনো দিন নেই। ১০ তারিখ ১১ তারিখ আমাদের কাছে কোনো মুখ্য বিষয় না। পুলিশের কাছে মুখ্য বিষয় হচ্ছে এখান থেকে বোমা নিক্ষেপ হয়েছে, ককটেল নিক্ষেপ করা হয়েছে, আমাদের সদস্যদের আহত করা হয়েছে। সাধারণ জনগণকে আতঙ্কিত করার চেষ্টা করা হয়েছে। সাধারণ মানুষ এখানে আহত হয়েছে, সাধারণ মানুষ নিহত হয়েছে। এখানে আমাদের তদন্ত কাজ চলমান। তদন্ত কবে শেষ হবে সেটা নির্দিষ্ট করে বলা যাবে না।’ 

গতকাল বিএনপি মহাসচিব অভিযোগ করেছেন, পুলিশ কার্যালয়ের ভেতরে বোমা, ককটেল নিয়ে গেছে। এই বিষয়ে এক প্রশ্নের জবাবে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘পুলিশ একটি রাষ্ট্রীয় বাহিনী, পুলিশের পক্ষ থেকে আনল’ফুল কোনো কাজ করা হয় না। কেউ যদি এমন কথা বলে থাকে এগুলো তার ব্যক্তিগত মতামত হতে পারে। কিন্তু ভেতর থেকে (বোমা) উদ্ধার করেছি। ভেতর থেকে আমাদের বোম্ব ডিসপোজাল ইউনিট তারা বোমাগুলোর বিস্ফোরণ ঘটিয়েছেন। কেউ যদি মিথ্যাচার করে, সে ব্যাপারে আমরা কোনো কিছু  বলতে চাই না।’

মামলার বিষয়ে ডিএমপির যুগ্ম কমিশনার বিপ্লব কুমার সরকার বলেন, ‘আরও দুয়েকটি থানায় মামলা হচ্ছে। মামলাগুলো প্রক্রিয়াধীন, হয়তো কিছুক্ষণের মধ্যেই আমরা আসামিদের কোর্টে প্রেরণ করবো।  বিভিন্ন সেকশনে মামলা হবে। পুলিশ অ্যাসল্ট, বোমা উদ্ধার হয়েছে— বিস্ফোরক দ্রব্য আইনে মামলা হবে, বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা। বিভিন্ন ধারায় মামলা হবে।’

বিএনপির শীর্ষ পর্যায়ের সম্ভাব্য করা কারা আসামি হচ্ছেন—জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এখানে তো সম্ভাব্য বলতে কিছু নেই। আমরা যাদেরকে গ্রেপ্তার করেছি তাদের বিরুদ্ধে মামলা হবে। আমাদের কাছে যদি আরও তথ্য থাকে, আমরা সবাইকে মামলার আসামি করবো।’

প্রসঙ্গত, গতকাল বুধবার বিকেলে নয়াপল্টনে পুলিশের সঙ্গে বিএনপির নেতা-কর্মীদের সংঘর্ষ হয়। এই সংঘর্ষে বিএনপির শতাধিক নেতাকর্মী আহত হয়। আটক করা হয় আরও শতাধিক নেতাকর্মী সমর্থকদের।

সংঘর্ষের পর গতকাল বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে অভিযান চালিয়ে ভেতর থেকে ১৫টি ককটেল উদ্ধার করে তা নিষ্ক্রিয় করার কথা জানিয়েছিল পুলিশ। এ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল বলেন, এগুলো পুলিশ ও সরকারের ষড়যন্ত্র।



মন্তব্য করুন

সর্বশেষ খবর
এই বিভাগের আর খবর