বিশ্বকাপ জয়ের পরেও যে কারণে মেসিকে অভিনন্দন জানাননি তেভেজ
আর্জেন্টিনায় মেসির অভিষেকের কয়েক বছর পরও তেভেজই ছিলেন দলের সবচেয়ে বড় তারকা।
তিন যুগ পর আর্জেন্টিনার পরম আরাধ্যের বিশ্বকাপ জয়েও উদযাপন করেননি, এমন আর্জেন্টাইনের কথা শুনলে দেশটির মানুষ হয়তো খেপেই যাবেন। কিন্তু বিস্ময়কর হলেও সত্যি, ৩৬ বছর পর আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ শিরোপা-খরা কাটলেও উপলক্ষটা উদ্যাপন করেননি কার্লোস তেভেজ। এমনকি অধিনায়ক মেসিকে অভিনন্দন জানানোরও প্রয়োজন মনে করেননি দেশটির সাবেক ফরোয়ার্ড।
শুধু কি তা-ই? তেভেজ বরং চেয়েছিলেন, ফাইনালে
নিজ দেশ আর্জেন্টিনাকে হারিয়ে বিশ্বকাপ ট্রফি ধরে রাখুক কিলিয়ান এমবাপ্পে-উগো লরিসদের
ফ্রান্স! বুয়েনস এইরেসভিত্তিক রেডিও স্টেশন ‘রাদিও মিতার’-এর সঙ্গে আলাপচারিতায়
বিস্ফোরক সব কথা বলেছেন মেসির সাবেক সতীর্থ তেভেজ।
গত বছর খেলোয়াড়ি জীবনকে বিদায় জানিয়ে কোচিংয়ে
নাম লেখানো তেভেজ বলেছেন, ‘আমি কাতার বিশ্বকাপ মনোযোগ দিয়ে দেখিনি।
তবে ফ্রান্সের ম্যাচগুলো মিস করিনি। ওদের খেলা খুব ভালো লেগেছে।’
মেসির ফোন নম্বর থাকলেও কেন তাকে অভিনন্দন
জানাননি, এমন প্রশ্নে ৩৮ বছর বয়সী তেভেজের জবাব, ‘ওকে ফোন দিলেও
হয়তো পেতাম না। ভীষণ ব্যস্ত ছিল, ফোন অভিনন্দন বার্তায় ভরে গিয়েছিল। তবে আমার সন্তানেরা
আর্জেন্টিনার বিশ্বকাপ জয় আর মেসির প্রতিটি গোল উদ্যাপন করেছে।’
আর্জেন্টিনার হয়ে ৭৮ ম্যাচে ১৩ গোল করা
তেভেজ ২০১৫ সালের পর আর জাতীয় দলে সুযোগ পাননি। আলবিসেলেস্তেদের হয়ে মেসির অভিষেকের
কয়েক বছর পরও তেভেজই ছিলেন দলের সবচেয়ে বড় তারকা। দুজনে জাতীয় দলের হয়ে একসঙ্গে খেলেছেন
৫০টির বেশি ম্যাচ। তবে ধীরে ধীরে পাদপ্রদীপের আলো থেকে সরে যান তেভেজ। সব আভা গিয়ে
পড়ে মেসির ওপর। এতেই দুজনের মধ্যে দূরত্ব তৈরি হয়। সেটা স্বীকার না করলেও মনে মনে ক্ষোভ
ঠিকই পুষিয়ে রেখেছেন তেভেজ।
তাহলে কি মেসিকে কখনো অভিনন্দন জানাবেন
না! তেভেজের উত্তর, ‘অবশ্যই। ওর সঙ্গে আমার শিগগিরই দেখা হবে।
ওর সঙ্গে আলিঙ্গন করে অভিনন্দন জানাব।’
শৈশবের ক্লাব বোকা জুনিয়র্সের হয়ে ক্যারিয়ারের
ইতি টেনেছেন ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড, ম্যানচেস্টার সিটি ও জুভেন্টাসের হয়ে ১৩টি শিরোপা
জেতা তেভেজ। কিছুদিন পরই মেসির জন্মশহর রোজারিওর ক্লাব রোজারিও সেন্ট্রালের কোচ হিসেবে
কোচিংয়ে হাতেখড়ি হয় তাঁর। তবে পাঁচ মাস পরই পদত্যাগ করেন।
তেভেজ জানিয়েছেন, রোজারিও সেন্ট্রালের
দায়িত্ব ছাড়ার পর আরেক আর্জেন্টাইন ক্লাব ইন্দেপেনদিয়েন্তের কোচ হওয়ার প্রস্তাব পেয়েছিলেন।
কিন্তু আগ্রহ দেখাননি। আপাতত পরিবারকেই সময় দিতে চান, ‘কোচিংয়ের অভিজ্ঞতা
দারুণ ছিল। মানুষের ভালোবাসা পেয়েছি। তবে এখন আমি জীবনটাকে উপভোগ করছি। আমার একটা খামার
আছে। সেখানে পরিবারের সঙ্গে দারুণ সময় কাটছে।’
মন্তব্য করুন