সেই নূর ইসলামের চার স্ত্রীর কে কত পাবেন ঠিক করলেন আদালত

পুরোনো ছবি
রাজধানীর উত্তরায় বিআরটি প্রকল্পের গার্ডারচাপায় প্রাইভেটকারে থাকা একই পরিবারের পাঁচ সদস্য নিহতের ঘটনায় ২০ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দিয়েছে ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান চায়না গ্যাঝুবা গ্রুপ কোম্পানি লিমিটেড (সিজিজিসি)।
এই ক্ষতিপূরণের টাকা নেওয়ার জন্য
আবেদন করেছিলেন নিহত নুর ইসলামের চার স্ত্রী ও তিন সন্তান। ঢাকা চিফ মেট্রোপলিটন
ম্যাজিস্ট্রেট (সিএমএম) রেজাউল করিম নিহতের পরিবারের ওয়ারিশদের এই টাকা বণ্টন করে
দেন।
ক্ষতিপূরণের টাকার কে কত পেলেন
নিহত নুর ইসলামের চার স্ত্রী ও
দুই মেয়ে ও এক ছেলে ক্ষতিপূরণের টাকা নেওয়ার জন্য আবেদন করেন। তারা হলেন- নুর
ইসলামের স্ত্রী খন্দকার বিউটি বেগম, মাহমুদা পারভীন, রেহেনা, শাহিদা খানম ও দুই মেয়ে নিপা আক্তার, সানজিদা খানম রতনা এবং ছেলে রেজাউল মন্ডল। আবেদনের
পরিপ্রেক্ষিতে বিচারক প্রত্যেক স্ত্রীকে ৬২ হাজার ৫০০ টাকা, প্রত্যেক মেয়েকে ৪ লাখ ৩৭ হাজার ৫০০ টাকা এবং ছেলেকে ৮ লাখ
৭৫ হাজার টাকা পৃথকভাবে ৩০০ টাকায় ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে জিম্মানামা দাখিল পূর্বক
জিম্মা দেওয়ার নির্দেশ দেন।
টাকা নিয়ে বিরোধ দেখা দিলে আদালতে
জমা দেবেন ওয়ারিশরা
নিহত নূর ইসলামের সাত ওয়ারিশ
পৃথকভাবে স্ট্যাম্পে জিম্মানামা দিয়ে নিজের হাতে টাকা গ্রহণ করেন। জিম্মানামায়
তারা উল্লেখ করেন, ‘টাকা নিয়ে কোনো
বিরোধ দেখা দিলে আদালত চাহিবামাত্র আমি আদালতে টাকা জমা প্রদান করিব।’
উত্তরা পশ্চিম থানার আদালতের
সাধারণ নিবন্ধন কর্মকর্তা পুলিশের উপ-পরিদর্শক লিয়াকত আলী বলেন, ‘গত ২৪ জানুয়ারি ওয়ারিশদের ক্ষতিপূরণের টাকা দেওয়ার জন্য
আদালত নির্দেশ দেন। এরপর তারা ৩০০ টাকার ননজুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে হলফনামা দিয়ে
নেজারতশাখা থেকে ওই টাকা গ্রহণ করেন।
২০২২ সালের ১৫ আগস্ট বিকেল সোয়া
৪টার দিকে উত্তরায় প্যারাডাইস টাওয়ারের সামনে বিআরটি প্রকল্পের ক্রেন থেকে
গার্ডার ছিটকে পড়ে প্রাইভেটকারের পাঁচ যাত্রী নিহত হন। ওই গাড়িতে থাকা নবদম্পতি
গুরুতর আহত হলেও প্রাণে বেঁচে যান। নিহতরা হলেন- আইয়ুব আলী হোসেন রুবেল ওরফে নূর
ইসলাম (৫৫), ফাহিমা আক্তার (৩৮), ঝর্না আক্তার (২৭), ঝর্না আক্তারের দুই শিশুসন্তান জান্নাতুল (৬) ও জাকারিয়া (৪)। ওই ঘটনার রাতেই
নিহত ফাহিমা আক্তার ও ঝর্না আক্তারের ভাই মো. আফরান মণ্ডল বাবু বাদী হয়ে উত্তরা
পশ্চিম থানায় মামলা করেন।
মামলার পর হেভি ইকুইপমেন্ট
সরবরাহের দায়িত্বে থাকা ইফসকন বাংলাদেশ লিমিটেডের স্বত্বাধিকারী মো. ইফতেখার হোসেন, হেড অব অপারেশন মো. আজহারুল ইসলাম মিঠু, ক্রেন সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান বিল্ড ট্রেডের মার্কেটিং
ম্যানেজার তোফাজ্জল হোসেন ও প্রশাসনিক কর্মকর্তা রুহুল আমিন মৃধা, ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠানের সেফটি ইঞ্জিনিয়ার মো. জুলফিকার আলী
শাহ ও মো. মঞ্জুরুল ইসলাম, ক্রেনচালক মো.
আল-আমিন হোসেন ওরফে হৃদয়, রাকিব হোসেন, মো. আফরোজ ও ট্রাফিকম্যান মো. রুবেলকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ।
গ্রেপ্তারের পর তাদের বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়া হয়। বর্তমানে ১০ আসামিই
জামিনে। মামলাটির তদন্ত প্রায় শেষ পর্যায়ে। আসামিদের সর্বোচ্চ শাস্তি প্রত্যাশা
করছে নিহতের পরিবার।
মন্তব্য করুন