দুই শর্তে খালেদার মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ল
বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া। পুরোনো ছবি
আগের দুই শর্তেই বিএনপি চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত করে মুক্তির মেয়াদ আরও ৬ মাস বাড়ানো হয়েছে। আইন মন্ত্রণালয়ের মতামত পাওয়ার পর গত ১৯ মার্চ এ বিষয়ে প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়েছে।
রোববার (২৬ মার্চ) রাতে গণমাধ্যমকে বিষয়টি
নিশ্চিত করেছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. আবদুল্লাহ
আল মাসুদ চৌধুরী।
তিনি বলেন, ‘আইন মন্ত্রণালয়
যেভাবে মতামত দিয়েছে, সেই অনুযায়ী দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ বাড়ানো হয়েছে।’
আবদুল্লাহ আল মাসুদ চৌধুরী আরও বলেন, তিনি
(খালেদা জিয়া) বাসায় থেকে চিকিৎসা গ্রহণ করবেন এবং বিদেশে যেতে পারবেন না- আগের মতো
এ দুই শর্তে তার দণ্ডাদেশ আরও ছয় মাস স্থগিত করা হয়েছে। ২৫ মার্চ থেকে এটি কার্যকর
হয়েছে।
এ নিয়ে নির্বাহী আদেশে সাতবারের মতো দণ্ডপ্রাপ্ত
খালেদা জিয়ার মুক্তির মেয়াদ বাড়ানো হলো। এর আগে গত ১২ মার্চ খালেদা জিয়ার আবেদনে মতামত
দিয়ে তা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় পাঠানো হয় বলে জানিয়েছিলেন আইন, বিচার ও সংসদ বিষয়ক
মন্ত্রী আনিসুল হক।
খালেদা জিয়া দীর্ঘদিন ধরে আর্থ্রাইটিস,
ডায়াবেটিস, কিডনি, লিভার, ফুসফুস, চোখের সমস্যাসহ নানা শারীরিক জটিলতায় ভুগছেন। অসুস্থতা
বাড়লে মাঝেমধ্যে তাকে হাপাতালে নিতে হচ্ছে।
দুই মামলায় দণ্ডপ্রাপ্ত খালেদা জিয়া কারাবন্দি
ছিলেন। নির্বাহী আদেশে খালেদা জিয়ার দণ্ড স্থগিত রয়েছে। জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট দুর্নীতি
মামলায় ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি খালেদা জিয়াকে পাঁচ বছরের কারাদণ্ড দেন বকশীবাজার আলিয়া
মাদরাসা মাঠে স্থাপিত ঢাকার ৫ নম্বর বিশেষ আদালত। রায় ঘোষণার পর খালেদাকে পুরান ঢাকার
নাজিমউদ্দিন রোডে অবস্থিত পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি রাখা হয়। এরপর ৩০ অক্টোবর
এই মামলায় আপিলে তার আরও পাঁচ বছরের সাজা বাড়িয়ে ১০ বছর করেন হাইকোর্ট।
একই বছরের ২৯ অক্টোবর জিয়া চ্যারিটেবল
ট্রাস্ট দুর্নীতির মামলায় খালেদা জিয়াকে সাত বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের আদেশ দেন একই আদালত।
রায়ে সাত বছরের কারাদণ্ড ছাড়াও খালেদা জিয়াকে ১০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। জরিমানা
অনাদায়ে আরও ৬ মাসের কারাদণ্ডের আদেশ দেন।
২০২০ সালের মার্চে করোনা মহামারি শুরু
হলে পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে নির্বাহী আদেশে দণ্ড স্থগিত করে কারাবন্দি খালেদা
জিয়াকে সরকার শর্তসাপেক্ষে ছয় মাসের জন্য মুক্তি দেয়। এরপর পরিবারের আবেদনে দণ্ড স্থগিতের
মেয়াদ ছয়বার বাড়ানো হয়। সর্বশেষ দণ্ড স্থগিতের মেয়াদ গত ২৪ মার্চ শেষ হয়। এর আগেই
খালেদা জিয়ার পরিবারের পক্ষ থেকে মুক্তির মেয়াদ বাড়াতে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে
আবেদন করা হয়েছিল।
মন্তব্য করুন