চিনি খাওয়ার যত বিপদ

প্রতীকী ছবি
মিষ্টি জাতীয় খাবার খেতে পছন্দ করেন না এমন মানুষ খুব কমই আছে। খাবার খাওয়ার পরে মিষ্টি কিছু না খেলে যেন পরিপূর্ণ হয় না খাওয়া। আর এই মিষ্টি জাতীয় খাদ্যের প্রধান ও মূল উপকরণ চিনি। চিনি খেতে মিষ্টি হলেও এর ফল মোটেই মিষ্টি নয়।
বিশেষজ্ঞরা বলচেন, চিনি একটি নীরব ঘাতক।
চিনি শরীরে বিষের মতো কাজ করে অনেকটা। স্লো পয়জনিংয়ের মাধ্যমে শরীরকে মৃত্যুর দিকে
ঠেলে দেয়। চিনি খাওয়া অনেকটা নেশার মত বলা যায়। বারবার খেতে ইচ্ছে করে। বাজার থেকে
যে চিনি কিনে এনে চা কিংবা মিষ্টি জাতীয় খাবার তৈরিতে ব্যবহার করা হয়, সেটি শরীরের
জন্য খুবই ক্ষতিকর।
অনেকে সাদা চিনির পরিবর্তে লাল চিনি ব্যবহার
করে থাকেন। লাল চিনিকে সাদা চিনির থেকে তুলনামূলক ভালো বলা হয়, কারণ এটি রিফাইন করা
হয় না বলে ম্যাগনেসিয়াম, পটাশিয়াম ইত্যাদি খনিজ লবণ বিদ্যমান থাকে। চিনিকে রিফাইন
করে সাদা করা হলে এর মধ্যে কোনো খনিজ লবণ অবশিষ্ট থাকে না। তবে অতিরিক্ত পরিমাণে লাল
চিনি গ্রহণ করাও স্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর।
চিনি না খাওয়াই সবচেয়ে ভালো। তবে প্রয়োজনে
একজন ব্যক্তি দৈনিক ২৫ গ্রাম থেকে ৩৬ গ্রাম চিনি গ্রহণ করতে পারেন। একজন নারী দৈনিক
২৫ গ্রাম এবং একজন পুরুষ দৈনিক ৩৬ গ্রাম চিনি
খেতে পারেন। এর থেকে বেশি চিনি গ্রহণ করলে বিভিন্ন সমস্যা দেখা দিতে পারে। চলুন জেনে
নিই সেগুলো কী-
শরীরে ফ্যাট জমতে শুরু করে
চিনি খেলে তলপেট, চিবুক, হাত ও পায়ের
পেশীসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে ফ্যাট জমতে শুরু করে। ফলে শরীর খুব দ্রুত মোটা হয়ে যায়।
অতিরিক্ত ফ্যাট জমে গেলে রোগে আক্রান্ত হওয়ার আশঙ্কা বেড়ে যায়।
ডায়াবেটিসের ঝুঁকি বাড়ায়
অতিরিক্ত মিষ্টি জাতীয় খাবার খেলে ডায়াবেটিসের
ঝুঁকি বেড়ে যায়। যদি দৈনিক চিনি থেকে ১৫০ ক্যালরি গ্রহণ করা হয়, তাহলে ডায়াবেটিসের
ঝুঁকি বেড়ে যায় প্রায় ১ দশমিক ১ শতাংশ। এ ছাড়া যারা ডায়াবেটিসে আক্রান্ত, তাদের
জন্য চিনি অত্যন্ত ক্ষতিকর।
লিভারের ক্ষতি
অতিরিক্ত চিনি খেলে লিভারের চারপাশে অতিরিক্ত
চর্বির স্তর তৈরি হয়। ফলে লিভারের কার্যক্ষমতা কমে যেতে থাকে।
রক্ত চলাচলে বাধা
শরীরের রক্ত চলাচলের ধমনীর দেয়ালের পুরুত্ব
বাড়িয়ে দিতে পারে চিনি। ফলে রক্ত স্বাভাবিকভাবে চলাচল করতে পারে না এবং রক্তচাপ বেড়ে
যায়।
স্মৃতিশক্তি কমিয়ে দেয়
চিনির কারণে আলঝেইমারসের মতো রোগ হতে পারে।
মস্তিষ্কের কার্যক্ষমতা কমিয়ে দেয় চিনি।
বিষণ্নতা
অতিরিক্ত চিনে খেলে বিষণ্নতা তৈরি হয়।
শরীর সবসময় ক্লান্ত লাগে।
হার্ট অ্যাটাকের ঝুঁকি বাড়ায়
বেশি মাত্রায় চিনি খেলে রক্তের প্রবাহ
পরিবর্তিত হয়। ফলে হার্ট অ্যাটাক, হার্টফেল করার আশঙ্কাও বেড়ে যায়।
মন্তব্য করুন