জাবি শিক্ষক জনিকে অপসারণের দাবিতে মানববন্ধন
বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনের সড়কে মানববন্ধন করেন শিক্ষার্থীদের একাংশ।
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) প্রলোভন দেখিয়ে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে ‘অনৈতিক সম্পর্ক’ গড়ে তোলার অভিযোগে পাবলিক হেলথ এন্ড ইনফরমেটিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মাহমুদুর রহমান জনিকে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি এবং তদন্তের দাবিতে মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬
ডিসেম্বর) দুপুর পৌনে ১টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ মিনারের সামনের সড়কে এ মানববন্ধন
করেন শিক্ষার্থীদের একাংশ।
এ সময় শিক্ষার্থীরা শিক্ষক জনিকে সহকারী প্রক্টরের দায়িত্ব থেকে অব্যহতি প্রদান এবং তার বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগ তদন্ত করে বিচারের দাবি করেন।
জনির বিরুদ্ধে ওঠা এহেন কর্মকাণ্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য লজ্জাজনক উল্লেখ করে জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি সৌমিক বাগচি বলেন, ‘একজন শিক্ষকের কাজ হলো তিনি শিক্ষার্থীদের মাঝে নৈতিকতার আলো জ্বালাবেন। কিন্তু লজ্জ্বার ব্যাপার এই শিক্ষক জনি তার নীতি-নৈতিকতা ভুলে এমন লজ্জাজনক কাজ করেছে। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উদ্দেশে বলতে চাই, সত্য কখনো চাপা থাকে না। আপনারা এই ঘটনাকে ভিন্ন খাতে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছেন। আপনারা বলছেন অভিযোগ নেই, কিন্তু এর যথেষ্ট প্রমাণ আমরা সামাজি যোগাযোগ মাধ্যমে এবং বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় দেখেছি।’
তিনি প্রশাসনকে হুশিয়ারি দিয়ে বলেন, ‘এমন নীতিহীন শিক্ষককে আমরা কোনো কাজে দেখতে চাই না। তাকে সহকারী প্রক্টর থেকে বহিস্কার করা হোক। এই ক্যাম্পাসে নতুন করে কোনো মানিককে দেখতে চাই না। দুর্নীতিবাজ, লম্পট চরিত্রহীন কোনো শিক্ষিককে আমরা আমাদের ক্যাম্পাসে ঠাই দেব না।’
ছাত্র ইউনিয়ন জাবি সংসদের
সাংগঠনিক সম্পাদক আলিফ মাহমুদ বলেন, ‘জাহাঙ্গীরনগর
কোনো সরকারি বিশ্ববিদ্যালয় নয়। এখানে
শিক্ষক নিয়োগ হবে যোগ্যতা অনুযায়ী। কিন্তু আমরা দেখতে
পেলাম এই শিক্ষক জনি তার নৈতিকতা স্খলন
ঘটিয়ে নারী শিক্ষার্থীদের সাথে অপকর্ম করে তাদেরকে চাকরি পাওয়ার
ব্যবস্থা করেছেন। তার বিরুদ্ধে এত অভিযোগ থাকা সত্বেও প্রশাসন
নিশ্চুপ। তাদের এই নিশ্চুপতা দেখে আমরা লজ্জিত।’
জাহাঙ্গীরনগর সাংস্কৃতিক জোটের সাধারণ
সম্পাদক জাহিদ আল প্রীতমের উপস্থাপনায় আরও বক্তব্য রাখেন ছাত্রফ্রন্ট
জাকি শাখার সভাপতি আবু সাইদ। এ সময় উপস্থিত ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক কনৌজ কান্তি
রায়, সহ-সভাপতি সুমাইয়া ইসলাম, সাংগঠনিক সম্পাদক আরিফুল ইসলাম প্রমুখ।
উল্লেখ্য, সম্প্রতি জনির বেশকিছু ‘আপত্তিকর’ ছবি ও মেসেঞ্জার আলাপন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। সেখানে একাধিক ছাত্রীর সঙ্গে তার প্রেমের সম্পর্কের বিষয়টি উঠে আসে। এদিকে ফাঁস হওয়া একটি অডিও ক্লিপে একজনকে জোরপূর্বক গর্ভপাত করাতে বলতে শোনা যায় তাকে। জনির সঙ্গে অনৈতিক সম্পর্ক থাকা ছাত্রীদের একজন কিছুদিন আগে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক পদে নিয়োগ পেয়েছেন। এই নিয়োগে জনির প্রভাব রয়েছে বলেও অভিযোগ উঠেছে। জাবি শাখা ছাত্রলীগের সাবেক সভাপতি জনি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টরেরও দায়িত্বে রয়েছেন।
মন্তব্য করুন