টাইগারদের হতাশ করে সিরিজে সমতা ফেরাল শ্রীলঙ্কা
ছবি : সংগৃহীত
চৈত্র মাসের প্রথম দিনটায় দিনের বেলা টের পাওয়া গেল রোদের তাপ। কিন্তু রাতের আলোয় পরিস্থিতি একদম শীতের আমেজ। আগের ম্যাচের মতন শিশির পড়তে থাকল প্রবলভাবে। তাওহিদ হৃদয়-সৌম্য সরকারের ব্যাটে পাওয়া বড় পুঁজি নিয়ে শুরুতে প্রতিপক্ষের তিন উইকেট ফেলেও পেরে উঠল না বাংলাদেশ।
পাথুম নিসাঙ্কার সেঞ্চুরি আর চারিথা আসালাঙ্কার
৯০ ছাড়ানো ইনিংসেই ঠিক হয়ে যায় ম্যাচের গতিপথ। বোলিংয়ে ৪ উইকেটের পর ব্যাটিংয়ে শেষে
দিকে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখে নায়ক হয়ে যান ভানিন্দু হাসারাঙ্গা।
শুক্রবার চট্টগ্রাম জহুর আহমেদ চৌধুরী
স্টেডিয়ামে টস জিতে আর ভুল করেনি শ্রীলঙ্কা। শিশির হবে ভেবেই আগে বোলিং করে তারা। সেটা
কাজেই লাগে। বাংলাদেশের ২৮৬ রান টপকে সফরকারীরা ম্যাচ জিতে নিয়েছে ৩ উইকেটে। খেলা শেষ
করেছে ১৭ বল আগে। তাদের এই জয়ে তিন ম্যাচ সিরিজে
আসল ১-১ সমতা। বড় পুঁজি সামলাতে নেমে ইনিংসের দ্বিতীয় বলেই দলকে সাফল্য এনে দেন শরিফুল
ইসলাম। বেরিয়ে যাওয়া বলে স্লিপে ক্যাচ বানান আভিশকা ফার্নেন্দোকে।
তবে এই চাপ প্রতি আক্রমণে সামাল দেয় শ্রীলঙ্কা।
পাথুম নিশানকা-কুশল মেন্ডিস মিলে আনতে থাকেন দ্রুত রান। তানজিম হাসান সাকিবের দুই ওভারেই
২২ তুলেন তারা। উড়ন্ত শুরুটা নাগাল টেনে ধরেন তাসকিন। তার বেরিয়ে যাওয়া বলে খোঁচা মেরে
ক্যাচ দেন শ্রীলঙ্কান অধিনায়ক। প্রথম ম্যাচের মতন এদিনও ব্যর্থ সাদেরা সামারাবিক্রমা।
শরিফুল ইসলামের বলে ড্রাইভ করতে গিয়ে পয়েন্টে ধরা দেন তিনি। ৪৩ রানে ৩ উইকেট হারিয়ে
ফেলে সফরকারীরা।
এরপর দলের হাল ধরেন চারিথা আসালাঙ্কা-নিসাঙ্কা। শুরুতে পরিস্থিতি বুঝে থিতু হন, পরে তারা মেলতে
থাকেন ডানা। তারা থিতু হতে হতে নামতে থাকে প্রচুর শিশির। শিশিরে বল গ্রিপ করা হয়ে যায়
কঠিন। মেহেদী হাসান মিরাজের ১০ ওভার পুরো করতে পারলেও তাইজুল ইসলামকে দিয়ে ৫ ওভারের
বেশি করানো যায়নি। তাতেই তিনি দিয়ে দেন ৪৩ রান।
বিবর্ণ ছিলেন আগের ম্যাচে ঝলক দেখানো তানজিম
হাসান সাকিব। খরুচে বল করে ওভারপ্রতি দেন ৬.৫ রান করে।
কন্ডিশন বুঝে নিয়ে নিজেদের করনীয়ও ঠিক
করে নেন নিসাঙ্কা-আসালাঙ্কা। বাংলাদেশকে ক্রমশ ম্যাচ থেকে বের করতে থাকেন দুজন। দুজনেই
একসঙ্গে তাল মিলিয়ে করেন ফিফটি, নিসাঙ্কা শুরুতে পঞ্চাশ স্পর্শ করলেও তাকে মাঝে আবার
ছাড়িয়ে যান আসালাঙ্কা। আসাঙ্কাকাকে ৬৭ রান রেখে মাঝের ওভারে ঝড় তুলে সেঞ্চুরির কাছে
চলে যান ডানহাতি ওপেনার।
ঠিক ১০০ বলে স্পর্শ করেন সেঞ্চুরি। পরে
দ্রুত রান তোলার দিকে যান তিনি। তা করতে গিয়ে মেহেদী হাসান মিরাজের বলে বাউন্ডারি লাইনে
ক্যাচ দেন তিনি। ১১৩ বলে ১৩ চার, ৩ ছক্কার ইনিংস যখন থামে লঙ্কানদের জেতার জন্য দরকার
আর স্রেফ ৫৯।
চতুর্থ উইকেটে ১৮৩ বলে ১৮৫ রানের এই জুটিই
গড়ে দেয় ম্যাচের গতিপথ। অবশ্য ১১৪ করে নিসাঙ্কার বিদায়ের পর আসালাঙ্কাও বিদায় নেন ৯১
করে। জেনিত লিয়ানাগে তানজিম হাসান সাকিবের বলে আউট হলে কিছুটা উত্তেজনা তৈরি হয়েছিলো।
সেটা দমিয়ে দেন দুনিত ভেলেলাগে ও হাসারাঙ্গা। ৩৪ বলে গুরুত্বপূর্ণ ৩৪ রানের জুটি আনেন
তারা। বোলিংয়ে ৪ উইকেট নেওয়া হাসারাঙ্গা ১৬ বলে ২৫ রান করে ম্যাচের সমস্ত অনিশ্চয়তা
দূর করে দেন তিনি।
মন্তব্য করুন