শনিবার, ৪ মে ২০২৪ | ২০ বৈশাখ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বেইলি রোডে আগুনের ‘আসল কারণ’ জানা গেল

নিজস্ব প্রতিবেদক
২০ এপ্রিল ২০২৪ ২১:৪৮ |আপডেট : ২৩ এপ্রিল ২০২৪ ২২:৩৪
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রিন কোজি কটেজ
ক্ষতিগ্রস্ত গ্রিন কোজি কটেজ

গত ২৯ ফেব্রুয়ারি রাতে রাজধানীর বেইলি রোডের ‘গ্রিন কোজি কটেজ’ বহুতল ভবনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় ৪৬ জনের মৃত্যু হয়। ঘটনার পর ভবনটি পরিদর্শন করে প্রাথমিক তদন্তে অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাত হিসেবে সম্ভাব্য একাধিক কারণ উল্লেখ করে বিভিন্ন তদন্ত সংস্থা। তবে প্রকৃত কারণ কেউ তখন জানাতে পারেনি।

এ ঘটনার পর ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরীকে প্রধান করে পাঁচ সদস্যের একটি তদন্ত কমিটি করা হয়। তদন্তকালীন এ ঘটনায় আসামিরা পলাতক থাকায় তদন্তে বিলম্বের কথা জানায়েছিল ফায়ার সার্ভিস।

অবশেষে ফায়ার সার্ভিসের তদন্তে আগুন লাগার প্রকৃত কারণ বের হয়ে এসেছে। তদন্ত শেষে সংস্থাটি বলছে, ভবনটির নিচতলার চুমুক নামের চা-কফির দোকানের চুলা থেকে আগুনের সূত্রপাত হয়। এছাড়া ভবনে গ্যাস জমে থাকায় সেই আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে চারদিকে।

শনিবার (২০ এপ্রিল) ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্স অধিদফতরের পরিচালক (অপারেশন ও মেইনটেন্যান্স) লেফটেন্যান্ট কর্নেল মোহাম্মদ তাজুল ইসলাম চৌধুরী বাংলা ট্রিবিউনকে বলেন, আমাদের তদন্ত রিপোর্টে আগুন লাগার কারণ হিসবে চুলার আগুন ও গ্যাসের কথা এসেছে। চুলার আগুন থেকে ধরে গ্যাসের কারণে ভবনটিতে আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে।

ফায়ার সার্ভিসের এই কর্মকর্তা বলেন, আগুন লাগার পর তদন্ত কমিটি একটা সময় এর কারণ খুঁজে বের করে। তবে একটি অগ্নিকাণ্ডের পর পরবর্তীতে কাজের জন্য যে সক্ষমতা থাকার প্রয়োজন সেটি কিন্তু আমাদের নেই। ইদানীং আমরা প্রতিটি অগ্নিকাণ্ডের সময় যেটি দেখতে পাচ্ছি, লোকজন কিছু না বুঝেই ভবনের সামনে ভিড় করে। উৎসুক জনতার ভিড়ের কারণে আগুন নেভাতে আমাদের ধীরগতি হয়।

তিনি বলেন, কোনও একটি অগ্নিকাণ্ড ভবন থেকে যেসব অচেতন লোকদের উদ্ধার করে নিয়ে আসছি, তাদের অনেকে কিন্তু হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার পথেই মারা যাচ্ছে। উন্নত দেশগুলোতে এসব ক্ষেত্রে ভ্রাম্যমাণ হাসপাতাল ব্যবস্থা থাকে, সেই রকম ব্যবস্থা কিন্তু আমাদের নেই। এছাড়া যেখানে অগ্নিকাণ্ড ঘটছে হয়তো ধারে-কাছে হাসপাতাল পাওয়া যাচ্ছে না। আরেকটি বিষয় হলো, যখন একসঙ্গে অনেক দগ্ধ অচেতন মানুষকে উদ্ধার করে একটি হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় সেখানেও ট্রিটমেন্টর ধীরগতি দেখা যায়। অনেক রোগী একসঙ্গে সামাল দিতে পারে না। এই যে আমাদের সবকিছুতেই সক্ষমতার অভাব, এসব কারণে কিন্তু হতাহতের সংখ্যা বাড়ছে। এই সক্ষমতা বাড়ানো প্রয়োজন বলে আমি মনে করি।

এই অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় অবহেলার কারণে মৃত্যুর অভিযোগে পুলিশ বাদী হয়ে মামলা করে। মামলায় আগুনের ঘটনায় জড়িত অভিযোগে প্রথমে তিন জনকে আটক করা হয়। তারা হলেন-চুমুক নামে একটি খাবার দোকানের মালিক আনোয়ারুল হক ও শফিকুর রহমান এবং কাচ্চি ভাই নামে আরেকটি খাবারের দোকানের ব্যবস্থাপক জয়নুদ্দিন জিসান। এর পরে আরও তিন জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে আগুনের ঘটনায় মোট ৬ জনকে গ্রেফতার করা হয়। পুলিশ জানিয়েছে, বর্তমানে মামলাটি তদন্ত করছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ সিআইডি।

এ প্রসঙ্গে সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) আজাদ রহমান বলেন, মামলা হওয়ার কয়েকদিন পরেই এটি আমাদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। মামলটির তদন্ত চলমান রয়েছে।



মন্তব্য করুন