মিতুকে হত্যার জন্য নতুন অস্ত্র কেনেন বাবুল আক্তার : মা
মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ
চট্টগ্রামের সাবেক এসপি বাবুল আক্তার তার স্ত্রী মিতুকে হত্যায় ব্যবহারের জন্য এক আসামিকে ৭০ হাজার টাকায় একটি অস্ত্র কিনে দিয়েছিলেন বলে আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে বলেছেন মিতুর মা শাহেদা মোশাররফ।
তিনি দাবি করেছেন ‘পরকীয়ার জেরে’ বাবুল
আক্তার তার স্ত্রী মিতুকে ভাড়াটে খুনি দিয়ে খুন করিয়েছেন। ১৫ দিন আগে বাবুল আক্তারের
মা টেলিফোন করে বলেছে বাবুল আক্তার মিতুকে খুন করেছে। তাকে যেন আমি মাফ করে দিই।
মঙ্গলবার চট্টগ্রামের তৃতীয় অতিরিক্ত মহানগর দায়রা জজ জসিম উদ্দিনের
আদালতে দেওয়া সাক্ষ্যে এ কথা বলেন শাহেদা মোশাররফ।
সাক্ষ্য দেওয়ার সময় মেয়ে মিতুর মৃত্যুর ঘটনা বর্ণনা করতে গিয়ে কয়েকবার
কান্নায় ভেঙে পড়েন শাহেদা মোশাররফ। তিনি বলেন, শুরু থেকেই বাবুল-মিতুর দাম্পত্য সম্পর্ক
ভালো ছিল না। বাবুলের ‘পরকীয়ার’ ঘটনা
জানার পর তা মা-বোনকে জানিয়েছিলেন মিতু। এরপর মিতুকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন করেন
বাবুল। তাতে অতিষ্ঠ হয়ে মিতু তিন-চারবার আত্মহত্যার চেষ্টা করেন। বিদেশে অবস্থানকালে
সেখানে বসেই মিতু হত্যার পরিকল্পনা করেছিলেন বাবুল আক্তার।
সাক্ষ্য শেষে দুপুরে বিরতি দিয়ে বিকেল পৌনে ৫টা পর্যন্ত জেরা চলে। শাহেদা
মোশাররফের জেরা অসমাপ্ত রেখেই দিনের কার্যক্রম শেষ হয়। বুধবার আবার তাকে জেরা করবেন
আসামিপক্ষের আইনজীবীরা।
২০১৬ সালের ৫ জুন সকালে চট্টগ্রাম নগরীর জিইসি মোড়ে ছেলেকে স্কুলবাসে
তুলে দিতে যাওয়ার সময় মিতুকে প্রকাশ্যে গুলি চালিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। মিতুর স্বামী
পুলিশের চাকরিচ্যুত এসপি বাবুল ওই ঘটনার কিছুদিন আগেই চট্টগ্রাম থেকে বদলি হন। তিনি
ঢাকায় কর্মস্থলে যোগ দিতে যাওয়ার পরপরই চট্টগ্রামে এ হত্যাকাণ্ড ঘটে। শুরুতে জঙ্গিদের
দিকে আঙুল তোলা হলেও পরে কাহিনীতে আসে নাটকীয়তা। সাড়ে তিন বছর তদন্ত করেও ডিবি পুলিশ
কোনো কূলকিনারা করতে না পারার পর ২০২০ সালের জানুয়ারিতে আদালতের নির্দেশে মামলার তদন্তভার
পায় পিবিআই। এক পর্যায়ে মামলার বাদী থেকে এক পর্যায়ে আসামিতে পরিণত হন বাবুল। চাকরিও
হারান তিনি।
মন্তব্য করুন