পুলিশ বাহিনীকে কাজে যোগদানের সময় বেঁধে দিয়ে বাহিনীতে পরিবর্তন আনার ঘোষণা দেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।

রোববার বিকেলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে আন্দোলনরত পুলিশ সদস্যদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে বৈঠকে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পুলিশের ইউনিফর্ম, লোগো সব পরিবর্তন করা হবে। পুলিশের অনেকের মন ভেঙে গেছে। এই ইউনিফর্ম পরে পুলিশ আর কাজ করতে চাইছে না। খুব দ্রুতই তা পরিবর্তন করা হবে। এসব বিষয়ে মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনার পর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা।

রাজনৈতিক সরকারের সমালোচনা করে এম সাখাওয়াত হোসেন বলেন, পুলিশের যতখানি না দোষ, তার চেয়ে বেশি দোষ তাদের যারা কমান্ড করেছে। তাদের দিয়ে অনেক রাজনৈতিক কাজ করানো হয়েছে। এসব বিষয়ে বিস্তারিত মন্ত্রিসভার বৈঠকে আলোচনা করা হবে। উপদেষ্টা বলেন, পুলিশ সদস্যেরা প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, এখন থেকে তারা ঠিকমতো কাজ করবেন।

এর আগে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা ছাত্রদের সঙ্গে বৈঠক করেন। ছাত্ররা তাকে জানায়, পুলিশের সঙ্গে তাদের কোনো বিরোধ নেই। পুলিশ তাদের দায়িত্ব পালন করবে।

তিনি আরও বলেন, একটি পুলিশ কমিশন হওয়া উচিত। সেই কমিশনের অধীনেই পুলিশ পরিচালিত হবে। তারা কোনো রাজনৈতিক দলের অধীনে থাকবে না। পুলিশকে যেন রাজনৈতিকভাবে ব্যবহার না করা হয়, সেটা নিশ্চিত করতে হবে।

বৈঠক শেষে পুলিশের কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়েছেন আন্দোলনকারী পুলিশ সদস্যদের সমন্বয়ক পরিদর্শক জাহিদুল ইসলাম ও কনস্টেবল শোয়েবুর রহমান। তারা বলেন, সরকারের কাছে পুলিশ যেসব দাবি জানিয়েছিল তার বেশির ভাগই মেনে নেওয়ার আশ্বাসে কর্মবিরতি প্রত্যাহারের ঘোষণা দিলেন তারা।

বৈঠক সূত্র জানায়, পুলিশের ১১ দফা দাবির কয়েকটি অল্প সময়ের মধ্যে পূরণের আশ্বাস দেওয়া হয়েছে। অন্য দাবিগুলো পূরণ করা হবে দীর্ঘ মেয়াদে। বৈঠকের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী পুলিশের কোনো সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ থাকলে তা ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের অবহিত করতে হবে।

এর আগে আগামী বৃহস্পতিবারের মধ্যে পুলিশ সদস্যদের নিজ নিজ দায়িত্বে যোগ দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। নির্দিষ্ট তারিখের পর কাজে না ফিরলে পুলিশ সদস্যদের পলাতক ঘোষণা করা হবে বলে জানিয়েছেন স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) এম সাখাওয়াত হোসেন।