বুধবার, ২২ জানুয়ারি ২০২৫ | ৯ মাঘ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

চাঁপাইনবাবগঞ্জ সীমান্ত

গাছ কাটা নিয়ে উত্তেজনা, হামলায় ৩ বাংলাদেশি আহত

নিজস্ব প্রতিবেদক
১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ০৯:৩৬ |আপডেট : ১৯ জানুয়ারি ২০২৫ ২২:১০
ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

চাঁপাইনবাবগঞ্জের শিবগঞ্জ উপজেলার চৌকা সীমান্তে আবারও উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। সীমান্ত এলাকায় গাছ কাটাকে কেন্দ্র করে গতকাল শনিবার দুপুরে চৌকা ও কিরণগঞ্জ বিজিবি সীমান্ত ফাঁড়ির মাঝামাঝি স্থানে বাংলাদেশ ও ভারতের নাগরিকদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সময় ভারতীয়দের হামলায় তিন বাংলাদেশি আহত হয়েছেন।

সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা ও বিজিবি সূত্রে জানা যায়, গতকাল দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে একদল ভারতীয় এসে বাংলাদেশের ভেতরের বেশ কিছু আমগাছ কেটে দেন। বাংলাদেশিরা এ সময় বাধা দিতে গেলে দুই পক্ষের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া শুরু হয়।

গতকাল রাত নয়টায় এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিজিবি জানায়, গাছ কাটাকে ঘিরে বাংলাদেশি ও ভারতীয় নাগরিকদের মধ্যে হাতাহাতি হয়। একপর্যায়ে ৩০০ থেকে ৪০০ ভারতীয় নাগরিক ও তিন থেকে চার হাজার বাংলাদেশি সীমান্তের শূন্যরেখায় জড়ো হয়ে একে অপরের দিকে ইটপাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকেন। এ সময় ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনী (বিএসএফ) সাত থেকে আটটি ককটেল ও সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করে। পরে বিজিবি সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

স্থানীয় বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভারতীয়রা ২০টি আমগাছ কেটে ফেললে এলাকার লোকজন সীমান্ত এলাকায় জড়ো হয়ে তাঁদের বাধা দেন। এ সময় বিএসএফ কাঁদানে গ্যাসের শেল ছোড়ে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, ভারতীয়দের হামলায় আহত ব্যক্তিরা হলেন সীমান্ত এলাকার বাসিন্দা ফারুক, মো. সুজন ও রনি। তাঁদের মধ্যে ফারুক চোখে গুরুতর আঘাত পাওয়ায় তাঁকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।

সীমান্তে উত্তেজনার প্রেক্ষাপটে বিকেল চারটার দিকে বিজিবি ও বিএসএফের স্থানীয় কমান্ডার পর্যায়ে একটি পতাকা বৈঠক হয়। বৈঠক শেষে বিজিবির ৫৯ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া এক সংবাদ সম্মেলনে বলেন, সীমান্তে উত্তেজনাকর পরিস্থিতির জন্য দুঃখ প্রকাশ করেছে বিএসএফ। পাশাপাশি গাছ কাটার বিষয়ে ব্যবস্থা নেওয়ার কথা জানিয়েছে বিএসএফ। তিনি বলেন, কেউ যাতে শূন্যরেখা অতিক্রম না করে, সে জন্য তৎপর রয়েছে বিজিবি।

লেফটেন্যান্ট কর্নেল গোলাম কিবরিয়া আরও বলেন, বিএসএফ উচ্ছৃঙ্খল লোকজনকে (মব) নিয়ন্ত্রণ করার জন্য সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করেছে, যেটা আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন। এ ব্যাপারে বিজিবির মহাপরিচালককে তাঁরা বিস্তারিত বর্ণনা করেছেন। তিনি আশা করছেন, বিজিবি ও বিএসএফের উচ্চপর্যায়ে এ ব্যাপারে কথা হবে।

সীমান্তে উত্তেজনার পর সীমান্তবর্তী এলাকার বাসিন্দাদের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। গতকাল রাতে বিজিবির ৫৯ ব্যাটালিয়নের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, বর্তমানে সীমান্ত এলাকার পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। যেকোনো ধরনের পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে সতর্ক অবস্থানে রয়েছে বিজিবি।

এর আগে গত জানুয়ারি চৌকা সীমান্তের ওপার বিএসএফের কাঁটাতারের বেড়া নির্মাণ করতে গেলে বিজিবি বাধা দেয়। এ নিয়ে কয়েক দিন ধরে সেখানে উত্তেজনা ছিল। ওই ঘটনায় চৌকা সীমান্তে বিজিবি ও বিএসএফের স্থানীয় কমান্ডার পর্যায়ে পতাকা বৈঠক হয়।



মন্তব্য করুন