পাকিস্তানে যাত্রীবাহী ট্রেন হাইজ্যাক, জিম্মি শতাধিক

ছবি : সংগৃহীত
পাকিস্তানের বেলুচিস্তানে গুলিবর্ষণের পর একটি যাত্রীবাহী ট্রেন হাইজ্যাক করা হয়েছে। এসময় হামলায় ট্রেনচালকসহ বেশ কয়েকজন আহত হয়েছেন। এছাড়া নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যসহ অন্তত শতাধিক যাত্রীকে জিম্মি করা হয়েছে।
মঙ্গলবার বেলুচিস্তানের কোয়েটা থেকে খাইবার পাখতুনখোয়ার পেশোয়ারগামী
‘জাফর এক্সপ্রেস’ ট্রেনে এ ঘটনা
ঘটে। ট্রেনটিতে সাধারণ যাত্রীদের পাশাপাশি পুলিশ এবং আইএসআইয়ের সদস্যরাও ছিলেন খবর
ডনের।
বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন বেলুচ লিবারেশন আর্মি এ হামলার দায় স্বীকার করে
জানিয়েছে, তারা নিরাপত্তাবাহিনীর সদস্যসহ বেশ কয়েকজনকে জিম্মি করেছেন।
রেলওয়ের কন্ট্রোলার মোহাম্মদ কাশিফ জানান, নয়টি বগির ট্রেনটিতে অন্তত
৫০০ জন যাত্রী রয়েছেন।
তিনি আরও বলেন, একটি টানেলে সশস্ত্র সন্ত্রাসীরা ট্রেনটি থামিয়ে দেয়।
যাত্রী ও রেলওয়ে স্টাফদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা চলছে।
সিবির সীমান্তবর্তী এলাকার এক সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা জানান, ট্রেনটি
একটি টানেলের ঠিক আগে আটকে রয়েছে। ট্রেনটির চারপাশে পাহাড়বেষ্টিত। এটি একটি পাহাড়ি
অঞ্চল, যেখানে জঙ্গিদের ঘাঁটি তৈরি করা সহজ এবং হামলার পরিকল্পনা করা সম্ভব।
প্রাদেশিক সরকার স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে জরুরি ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ
দিয়েছে। ঘটনাস্থলে অ্যাম্বুলেন্স ও নিরাপত্তাবাহিনী পাঠানো হয়েছে। কোয়েটা সিভিল হাসপাতালে
জরুরি অবস্থা ঘোষণা করা হয়েছে।
স্বাস্থ্য বিভাগের মুখপাত্র ডা. ওয়াসিম বেগ জানিয়েছেন, সব চিকিৎসক,
ফার্মাসিস্ট, নার্স এবং প্যারামেডিক স্টাফদের হাসপাতালে ডেকে পাঠানো হয়েছে।
বেলুচ সরকারের মুখপাত্র শহিদ রিন্দ স্বীকার করেছেন, দুর্গম পাহাড়ি অঞ্চল
হওয়ায় উদ্ধারকাজে বেশ অসুবিধা হচ্ছে। তবে বেলুচ সরকার সব সংস্থাকে সক্রিয় থাকতে নির্দেশ
দিয়েছে।
হামলায় এখন পর্যন্ত হতাহত হওয়ার সঠিক তথ্য পাওয়া যায়নি।
বেলুচ সরকারের পক্ষ থেকে ইতোমধ্যে হামলার তীব্র নিন্দা করা হয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের মন্ত্রী মহসিন নাকভি বলেন, যেসব পশু নিরীহ যাত্রীদের
গুলি করেছে, তারা কোনোভাবেই ক্ষমার যোগ্য না।
সিন্ধু সরকারের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী জিয়াউল হাসান লাঞ্জার এক বিবৃতিতে
হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে বলেন, রাষ্ট্র ও সমাজবিরোধী শক্তির ঘৃণ্য পরিকল্পনা কখনোই
সফল হতে দেওয়া হবে না। সিন্ধু সরকার বেলুচিস্তান সরকারের পাশে রয়েছে।
বেলুচিস্তানে দীর্ঘদিনের বিদ্রোহ ও সন্ত্রাসবাদ
বেলুচিস্তান দশকব্যাপী বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলনের কেন্দ্রস্থল, যেখানে
বিদ্রোহীরা সরকার, সেনাবাহিনী এবং চীনা স্বার্থের বিরুদ্ধে হামলা চালিয়ে আসছে। বেলুচিস্তানের
বড় বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠনগুলোর মধ্যে বেলুচ লিবারেশন আর্মি সবচেয়ে শক্তিশালী।
বেলুচিস্তানের প্রাকৃতিক গ্যাস ও খনিজ সম্পদ নিয়ে পাকিস্তান সরকারের
সঙ্গে বিচ্ছিন্নতাবাদী এ সংগঠনটির বিরোধ চলছে। বেলুচিস্তানের স্বাধীনতার জন্য দীর্ঘদিন
ধরে তারা স্বশস্ত্র হামলা চালিয়ে আসছে।
মন্তব্য করুন