রবিবার, ২২ ডিসেম্বর ২০২৪ | ৮ পৌষ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

দেড় বছরে ৪৮টি গরু চুরি চক্রের দলনেতাসহ গ্রেপ্তার পাঁচ

নীলফামারী প্রতিনিধি
২৭ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ১৮:৪৩ |আপডেট : ২৮ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০০:২২
ছবি : সংগৃহীত
ছবি : সংগৃহীত

নীলফামারীর জলঢাকায় গরু চুরি চক্রের দলনেতাসহ পাঁচ সদস্যকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। মঙ্গলবার রাত থেকে বুধবার ভোর পর্যন্ত উপজেলার বিভিন্ন স্থানে অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করে জলঢাকা থানা পুলিশ।

বুধবার (২৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে নীলফামারী পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলণ কক্ষে এক সংবাদ সম্মেলনে ওই তথ্য জানান পুলিশ সুপার মো. গোলাম সবুর। 

গ্রেপ্তারকৃতরা হলেন জলঢাকার বগুলাগাড়ী পশ্চিমপাড়া গ্রামের আফজাল হোসেনের ছেলে তরিকুল ইসলাম (২৩), বগুলাগাড়ী বারঘড়িয়া ধাড়াবেচাটারী গ্রামের মৃত বাবুল হোসেনের ছেলে ছাদেকুল ইসলাম (২৩), কদমতলী হাজীপাড়া গ্রামের মৃত আব্দুল্লাহর ছেলে উমর ফারুক (২৫), বগুলাগাড়ী মাঝাপাড়া গ্রামের হবিবুর রহমানের ছেলে আব্দুর রাজ্জাক (২৫) ও পূর্বকাঠালী ক্যানেলেরপাড় গ্রামের মুকুল চন্দ্র রায়ের ছেলে শংকর চন্দ্র রায় (১৯)।

সংবাদ সম্মেলনে পুলিশ সুপার  গোলাম সবুর জানান, গত ২১ সেপ্টেম্বর উপজেলার বালাগ্রাম ইউনিয়নের শালনগ্রাম বটতলী গ্রামের কমলকান্ত রায়ের বাড়ি থেকে ছয়টি গরু চুরি যাওয়ায়। ওই রাতেই জলঢাকা থানায় একটি মামলা দায়ের হলে চুরি যাওয়া গরু উদ্ধার করতে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সদর সার্কেল মোস্তফা মঞ্জুর ও জলঢাকা থানার পরিদর্শক মুক্তারুল আলমের নেতৃত্বে অভিযানে নামে পুলিশ। টানা ৪৮ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে তথ্য প্রযুক্তির সহযোগীতায় উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।

পুলিশ সুপার আরো জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে তরিকুল ইসলাম গরু চুরি চক্রের দলনেতা। তরিকুল তার দুই সহযোগী শংকর ও ছাদেকুলকে সাথে নিয়ে এলাকার বিভিন্ন ব্যক্তির সুপারী বাগান থেকে সুপারি চুরি করে জলঢাকা বাজারে বিক্রি করতো। ওই বাজারে তাদের সাথে পরিচয় ঘটে চোর ওমর ফারুক ও আব্দুর রাজ্জাকের সাথে। পরে তারা সংঘবদ্ধ হয়ে তরিকুলের নেতৃত্বে দিনের বেলায় উপজেলার বিভিন্ন স্থান থেকে ছাগল চুরি করে হাটবাজারে বিক্রি করতো। এভাবে তারা এলাকায় অর্ধশত ছাগল চুরি করে। এরপর তাদের সাথে আরো কিছু চোরের সখ্যতা গড়ে উঠলে তারা গরু চুরির পরিকল্পনা করে। শংকর ও ছাদেকুল দিনের বেলায় রিক্সাভ্যানে চরে শালনগ্রাম, সাইডনালা, বারোগ্রাম এলাকায় কোন বাড়িতে গরু আছে তা সন্ধান করে তরিকুলের নেতৃত্বে শংকর ও ছাদেকুল রাজ্জাকসহ অন্যান্য সহযোগীরা রাতের বেলায় ওই বাড়ি থেকে গরু চুরি করে নির্জন স্থানে অপেক্ষা করতো। এরপর তরিকুল মোবাইল ফোনে কল দিলে মিনি ট্রাক নিয়ে হাজির হতো উমর ফারুক। এরপর তারা চোরাই গরু গুলো ট্রাকে তুলে নিয়ে দেশের বিভিন্ন হাট-বাজারে বিক্রি করতো। এভাবে তারা গত দেড় বছরে মোট ৪৮টি গরু চুরি করে।

জলঢাকা থানার অফিসার ইনচার্জ মো. মুক্তারুল আলম জানান, গ্রেপ্তারকৃতদের মধ্যে তরিকুল, শংকর ও ছাদেকুলকে বিজ্ঞ আদালতে হাজির করা হলে তার ১৬৪ ধারা মোতাবেক বিজ্ঞ বিচারকের কাছে স্বীকারোক্তিমুলক জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর দুই আসামি উমর ফারুক ও আব্দুর রাজ্জাককে আদালতে হাজির করে দুই দিনের পুলিশী রিমান্ডে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে গরু চুরির কাজে ব্যবহৃত মিনি ট্রাক এবং চুরি যাওয়া গরু গুলো উদ্ধার করা সম্ভব হবে। একই সাথে এই চক্রের বাকী সদস্যদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।

সংবাদ সম্মেলণে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আমিরুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার সাইফুল ইসলাম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (সদর সার্কেল) মোস্তফা মঞ্জুর ও জলঢাকা থানার পরিদর্শক মুক্তারুল আলম উপস্থিত ছিলেন।



মন্তব্য করুন