অভিযানে গিয়ে পথেই অবরুদ্ধ ম্যাজিস্ট্রেট পুলিশ র্যাবসহ ৬০ জন
ছবি : সংগৃহীত
অবৈধ ইটভাটা উচ্ছেদ অভিযানে গিয়ে উল্টো নিজেরাই অবরুদ্ধ হয়েছেন তিন ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র্যাব, আনসার, ফায়ার সার্ভিসের সদস্যসহ অন্তত ৬০ জনের একটি দল। ভাটা মালিক ও শ্রমিকরা আড়াই ঘণ্টারও বেশি আটকে রাখেন তাদের। পরে অভিযান না চালিয়েই ফিরতে হয় প্রশাসনের কর্মকর্তাদের।
কুষ্টিয়ার কুমারখালীর চরসাদিপুর ইউনিয়নের
ভোমরার মোড়ে বুধবার (৪ ডিসেম্বর) সকাল ১১টা থেকে দুপুর দেড়টা পর্যন্ত এই ঘটনা ঘটে।
অবরুদ্ধ কর্মকর্তরা হলেন: কুষ্টিয়া সদর
উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি) রিফাতুল ইসলাম, কুমারখালী উপজেলা সহকারী কমিশনার ( ভূমি)
মো. আমিরুল আরাফাত, পাবনা সদর উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মুরাদ হোসেন ও কুষ্টিয়া
পরিবেশ অধিদফতরের উপপরিচালক (ভারপ্রাপ্ত) হাবিবুল বাসার।
তারা জানান, পদ্মা নদীর কুলঘেঁষে কুষ্টিয়ার
কুমারখালীর চরসাদীপুর ইউনিয়ন। এখানে প্রায় ২৩ হাজার মানুষের বসবাস। বিভিন্ন সময়ে ভাঙনে
প্রায় পাঁচ বর্গমাইল এরইমধ্যে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। এখানে রয়েছে বসতি এবং তিন ও দুই
ফসলি কৃষি জমি। সেখানে আইন অমান্য করে গড়ে তোলা হয়েছে প্রায় ৩৩টি অবৈধ ইটভাটা। এছাড়াও
ইউনিয়ন ঘেঁষে কুষ্টিয়া সদর ও পাবনা অংশজুড়ে রয়েছে আরো অন্তত ৭টি ভাটা। যার সব গুলোই
অবৈধ।
বুধবার এই ভাটাগুলো উচ্ছেদ অভিযানে গেলে
মালিক-শ্রমিকদের বাধার মুখে পড়তে হয়।
জনগণের জান ও মালের নিরাপত্তার স্বার্থে
আইন প্রয়োগ না করে ভাটা মালিকদের মুচলেকা নিয়ে ফিরে এসেছেন বলেও জানান প্রশাসনের কর্তারা।
নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও কুমারখালী সহকারী কমিশনার
(ভূমি) আমিরুল আরাফাত বলেন, দুর্গম চরসাদিপুর এলাকায় ৩০টির অধিক অবৈধ ইটভাটা রয়েছে।
রাষ্ট্র ও জনগণের স্বার্থে অবৈধ ভাটায় অভিযান চালাতে তিনজন ম্যাজিস্ট্রেট, পুলিশ, র্যাব,
আনছার, ফায়ার সার্ভিসসহ অন্তত ৬০ জনের একটি দল যাচ্ছিলাম। তবে ভাটা মালিক ও শ্রমিকরা
পথেই অভিযান আটকে দিয়েছেন। প্রায় আড়াই ঘণ্টা চেষ্টা চালিয়েও ভাটায় পৌঁছানো যায়নি। আগামী
বছর আর অবৈধ ভাটা চলবে না, এই মর্মে ভাটা মালিকদের মুচলেকা নেয়া হয়েছে।
অবৈধ ভাটা মালিক সাখাওয়াত হোসেন বলেন,
‘ব্যাংক লোন
ও ধারদেনা করে অবৈধভাবে ভাটা চালাচ্ছি আমরা। অন্তত ১৯টি ড্রাম চিমনিসহ ৪০টি অবৈধ ভাটা
রয়েছে। সেখানে কয়েক হাজার শ্রমিক কাজ করে। সেজন্য তাদের জীবিকার কথা চিন্তা করে সম্মিলিতভাবে
অভিযানে বাধা দেয়া হয়েছে। আগামী বছর আর অবৈধ ভাটা চালাবো না, এই মর্মে মুচলেকা দিয়েছি।’
সরকারি কাজে বাধা প্রদানকারীদের তালিকা
করা হয়েছে এবং তাদের বিরুদ্ধে বিধি মোতাবেক ব্যবস্থা নেয়ার কথা জানান উপজেলা নির্বাহী
কর্মকর্তা এস এম মিকাইল ইসলাম।
তিনি বলেন, পরবর্তীতে আরও গুছিয়ে সুসজ্জিতভাবে
চরসাদিপুরে অভিযান চালানো হবে।
কুষ্টিয়া জেলা প্রশাসক মো. তৌফিকুর রহমান
জানান, অভিযানের ফিরতি মেসেজ এখনও তাকে জানানো হয়নি। জেনে পরে বিস্তারিত বলবেন তিনি।
মন্তব্য করুন