আবার ব্যবসায় ফিরতে চায় ডেসটিনি
এমএলএম কোম্পানি ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেড
এক দশকেরও বেশি সময় বন্ধ থাকার পর বিতর্কিত বহুমুখী বিপণন (এমএলএম) কোম্পানি ডেসটিনি ২০০০ লিমিটেড নতুন করে ব্যবসায় ফিরে আসার ঘোষণা দিয়েছে। একই সঙ্গে, বিনিয়োগকারীদের অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছে প্রতিষ্ঠানটি। তবে অর্থ ফেরত দেওয়ার প্রক্রিয়ায় সম্পদ বিক্রি নয়, বরং ব্যবসার মাধ্যমে তা সম্পন্ন করার পরিকল্পনা করা হয়েছে।
রাজধানীর কাকরাইলে আইডিইবি মিলনায়তনে রোববার
(৫ জানুয়ারি) অনুষ্ঠিত কোম্পানিটির ‘২৫ বছরে পদার্পণ’ অনুষ্ঠানে এমন ঘোষণা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে ১৯ সদস্যের পর্ষদের বেশির
ভাগই উপস্থিত ছিলেন। পর্ষদে ১২ জন হচ্ছেন শেয়ারহোল্ডার পরিচালক।
স্বতন্ত্র পরিচালক আহমেদ মুশফেক আনামের
সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন আদালত নিযুক্ত ডেসটিনির চেয়ারম্যান সুপ্রিম
কোর্টের আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া। গত বছরের ২৩ মে আদালত তাকে নিয়োগ দেন। অনুষ্ঠানে
বিশেষ অতিথি ছিলেন সাংবাদিক এম এ আজিজ।
২০০১ সালের ৫ জানুয়ারি আনুষ্ঠানিক যাত্রা শুরু করে কোম্পানিটি প্রথম এক যুগ সাফল্যের সঙ্গে ব্যবসা করে। বন্ধ থাকার কারণে পরের এক যুগ ব্যবসা করতে পারেনি। অথচ দেশজুড়ে রয়েছে ডেসটিনির ৪৫ লাখ গ্রাহক। ডেসটিনির ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) রফিকুল আমীনের অনুপস্থিতিতে তার আত্মীয় আশরাফুল আমীন কোম্পানিটি গোছাচ্ছেন।
অনুষ্ঠানে এসব কথা জানিয়ে বলা হয়, যত টাকা
আত্মসাৎ হয়েছে বলে বলা হচ্ছে, তার চেয়ে অনেক বেশি সম্পদ রয়েছে ডেসটিনির। তাই এত বছরেও
গ্রাহকেরা হাল ছাড়েননি। অনেক বছর কারাগারে থাকা কোম্পানিটির চেয়ারম্যান মোহাম্মদ হোসেন
ও এমডি রফিকুল আমীনের মুক্তিও দাবি করা হয় অনুষ্ঠানে।
প্রধান অতিথি প্রশান্ত ভূষণ বড়ুয়া অনলাইনে
যুক্ত হয়ে বলেন, ‘আমরা ব্যবসা শুরুর দ্বারপ্রান্তে। শিগগির আমাদের হতাশা দূর হয়ে যাবে।’
দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) রাজধানীর কলাবাগান
থানায় ২০১২ সালের ৩১ জুলাই প্রতিষ্ঠানটির বিরুদ্ধে দুটি মামলা করে। একটি মামলায় ১৯
জনের এবং অপর মামলায় ৪৬ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেয় দুদক। ডেসটিনির এমডি রফিকুল আমীনসহ
অন্য ৪৫ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
অভিযোগ রয়েছে, ডেসটিনি গ্রুপের শীর্ষ কর্মকর্তারা
এর সহযোগী প্রতিষ্ঠান ডেসটিনি ট্রি প্ল্যান্টেশনের গাছ বিক্রির নামে ২ হাজার ২৫৮ কোটি
টাকা আত্মসাৎ করেন। গত ২৮ নভেম্বর ট্রি প্ল্যান্টেশনের মামলার রায় হওয়ার দিন ধার্য
থাকলেও আদালত পরে নতুন তারিখ ধার্য করেন আগামী ১৫ জানুয়ারি।
অনুষ্ঠানের সভাপতি আহমেদ মুশফেক আনাম বলেন,
‘বড় সম্পদ ডেসটিনির
৪৫ লাখ প্রশিক্ষিত গ্রাহক। অন্য সম্পদ কেনা যায়, এ সম্পদ তৈরি করা হয়েছে। প্রত্যেক
গ্রাহক একজন করে উদ্যোক্তা।’
বিশেষ অতিথি এম এ আজিজ বলেন, ডেসটিনি ২০০০
এমন এক বিরল প্রতিষ্ঠান, যার বিরুদ্ধে বিনিয়োগকারীদের কোনো অভিযোগ নেই।
ডেসটিনি ২০০০ এর নবযাত্রা সম্পর্কে অনুষ্ঠানের
পরিচালক মোহাম্মদ ইকবাল জামাল বলেন, একটা দামি গাড়ি ১২ বছর চলেছিল। পরের ১২ বছর ছিল
গ্যারেজে। একটু সমস্যা হলেও এ গাড়ি আর থামবে না।
আশরাফুল আমীন বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা টাকা ফেরত পাবেন,
তবে সম্পদ বিক্রি করে নয়। আগামী রমজানে সারা দেশে আমরা অলাভজনক ফুড ব্যাংক স্থাপন করতে
চাই।’
মন্তব্য করুন