স্বরাষ্ট্র ও আইন উপদেষ্টার ওপর ক্ষোভ ঝাড়লেন হাসনাত আব্দুল্লাহ
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ না করায় আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল ও স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরীর ওপর ক্ষোভ ঝেড়েছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক হাসনাত আব্দুল্লাহ।
সোমবার (২১ অক্টোবর) রাতে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের
রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগের হামলায়
জড়িতদের বিচার ও ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার দাবিতে আয়োজিত বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এ ক্ষোভ
প্রকাশ করেন।
হাসনাত আব্দুল্লাহ বলেন, ‘আমি আসিফ স্যারসহ স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার
কাছে প্রশ্ন রাখতে চাই, যদি ছাত্রদের আড়াই মাস পরেও রাজু ভাস্কর্যে এসে দাঁড়াতে হয়
ছাত্রলীগকে নিষিদ্ধ করার জন্য, ছাত্রলীগ নেতাদের গ্রেফতার করার জন্য, তাহলে আপনাদের
কাজটা কী?’
আইন উপদেষ্টা আসিফ নজরুলের দৃষ্টি আকর্ষণ
করে তিনি বলেন, ‘আসিফ স্যার আপনার ওপর শিক্ষার্থীরা ভরসা রেখেছিল, ভরসা রাখছে। আজকে প্রতি
পদে পদে ছাত্রলীগ দ্বারা শিক্ষার্থীরা নির্যাতনের শিকার হচ্ছে। অতি দ্রুত সময়ের মধ্যে
যদি ছাত্রলীগের প্রত্যেকটা নেতাকর্মীকে আপনি গ্রেফতারের আওতায় নিয়ে আসতে না পারেন তাহলে
আপনি শহীদ এবং আহতদের রক্তের সঙ্গে বিশ্বাসঘাতকতা করছেন।’
বাংলাদেশে আর ফ্যাসিস্টদের পুনর্বাসন হবে
না বলে হুঁশিয়ারি দিয়ে হাসনাত বলেন, ‘ছাত্রলীগ ২৪ পরবর্তী বাংলাদেশে প্রাসঙ্গিক কিনা সেটার ফয়সালা ১৫ জুলাই
হয়ে গেছে। ছাত্রলীগ এবং আওয়ামী লীগের ভবিষ্যৎ কবরস্থ হয়ে গেছে ৫ আগস্ট। তারা ভারতে
বসে যতই ষড়যন্ত্র করুক না কেন ছাত্রলীগ, আওয়ামী লীগ এবং ফ্যাসিবাদী শক্তির আর কোনোদিন
বাংলাদেশে পুনর্বাসন হবে না।’
তিনি বলেন, ‘আমরা ফ্যাসিস্ট হাসিনার সংবিধান
মানি না। হাসিনাকে এ দেশে আসতে হবে, বিচারের মুখোমুখি করতে হবে। ফ্যাসিস্ট হাসিনার
পুনর্বাসন নয়, তাকে ফাঁসির কাষ্ঠে ঝুলতে হবে।’
রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনকে উদ্দেশ করে
হাসনাত বলেন, চুপ্পু সাহেব, এখনও সময় আছে, বঙ্গভবনের বিলাসিতা ছেড়ে নিজের পথ দেখুন।
প্রশাসন ও মিডিয়াকে হুঁশিয়ার করে তিনি
বলেন, ‘আপনারা যদি মনে করেন ফ্যাসিস্ট হাসিনার সঙ্গে আঁতাত করবেন তাহলে ভুল
ভাবছেন। ছাত্র-জনতা হাসিনার বিকল্প বেছে নিয়েছে, আপনাদের বিকল্প বাছাই করতেও দ্বিধা
করবে না। অনেক মিডিয়া, যারা ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের বন্দনা করে তার হাতকে শক্তিশালী
করেছে, সেই ফ্যাসিস্ট মিডিয়া আবার মাথাচাড়া দিয়েছে। কলাম লিখতে শুরু করেছে। সেই শ্রুতি-বন্দনা
এবং কলাম লেখা ৫ আগস্ট শেষ হয়ে গেছে। ফ্যাসিস্ট মিডিয়ারও পুনর্বাসন হবে না।’
বিক্ষোভ সমাবেশে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের
সমন্বয়ক সানজিদা আফিয়া অদিতি, হাসিব আল ইসলাম, আব্দুল হান্নান মাসুদ, আব্দুল কাদের,
আবু বাকের মজুমদার, রিফাত রশিদ ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সমন্বয়ক রাসেল আহমেদ বক্তব্য
দেন।
এর আগে সন্ধ্যা সাড়ে ৭টায় রাজু ভাস্কর্যের
সামনে থেকে মশাল মিছিল শুরু হয়ে ক্যাম্পাসের গুরুত্বপূর্ণ স্থান প্রদক্ষিণ করে আবার
রাজু ভাস্কর্যের পাদদেশে আসে। সেখানে সংক্ষিপ্ত সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়।
মন্তব্য করুন