সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস গ্রেপ্তার
চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী
বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র ও চট্টগ্রামের পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে রাজধানীর বিমানবন্দর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে
তাকে আটকের কথা জানিয়েছেন ডিবির অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার রেজাউল করিম মল্লিক।
তিনি বলেন, একটি অভিযোগের রিক্যুইজিশনের
ভিত্তিতে তাকে আটক করা হয়েছে। সে অনুযায়ী তাকে নির্ধারিত থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর
করা হবে। তার বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট অভিযোগের বিষয় তাৎক্ষণিকভাবে কিছু জানাতে পারেননি
এই গোয়েন্দা কর্মকর্তা।
এদিকে বিকালে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে শাহজালাল
বিমানবন্দর থেকে পুলিশ নিয়ে যায় বলে পুণ্ডরীক ধামের ফেইসবুক পেজে অভিযোগ করা হয়।
পোস্টে চিন্ময় কৃষ্ণ ব্রহ্মচারীর ছবি দিয়ে
লেখা হয়, ঢাকা বিমানবন্দর থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীকে ডিবি পরিচয়ে তুলে নিয়ে
যাওয়া হয়েছে।
গত ৫ আগস্টের পর দেশে সনাতন ধর্মাবলম্বীর
নামে কয়েক দফা সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। সেসব সমাবেশ থেকে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস বর্তমান সরকারের
উদ্দেশে নানান হুমকি-ধমকিমূলক বক্তব্য রাখেন। তবে আগে থেকে তিনি আলোচনায় থাকলেও গত
২৫ অক্টোবর বিকেলে চট্টগ্রাম নগরের লালদীঘি মাঠে ৮ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে সমাবেশে
বেশি আলোচনায় আসেন।
ওই সমাবেশ করা হয় বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ
মঞ্চের নামে। সমাবেশে এই চিন্ময় কৃষ্ণ দাসই বাংলাদেশের হিন্দুদের মঠ-মন্দিরে হামলা
বাড়িঘরে লুট, অগ্নিসংযোগসহ নানান অভিযোগ করেন। অথচ, তার বিরুদ্ধেই দেশে সাম্প্রদায়িক
সম্প্রীতি নষ্ট করার অভিযোগ রয়েছে। বিভিন্ন সময় তিনি উসকানিমূলক বক্তব্য দিয়ে থাকেন।
উল্লেখ্য, গত ৩০ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ
দাস ব্রহ্মচারীসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয়। জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহ
আইনে এ মামলা দায়ের হয়। এ ঘটনায় দুজনকে গ্রেপ্তার করে আইনশৃঙ্খলা বাহিনী। তারা হলেন
রাজেশ চৌধুরী ও হৃদয় দাস।
মো. ফিরোজ খান নামে এক ব্যক্তি বাদী হয়ে
চট্টগ্রাম নগরীর কোতোয়ালি থানায় মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার আসামিরা হলেন ইসকনের চট্টগ্রাম
বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও পুণ্ডরীক ধাম মন্দিরের অধ্যক্ষ চন্দন কুমার ধর প্রকাশ চিন্ময়
কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী (৩৮), চট্টগ্রামের হিন্দু জাগরণ মঞ্চের সমন্বয়ক অজয় দত্ত (৩৪),
নগরীর প্রবর্তক ইসকন মন্দিরের অধ্যক্ষ লীলা রাজ দাস ব্রহ্মচারী (৪৮), গোপাল দাশ টিপু(৩৮),
ডা. কথক দাস (৪০), প্রকৌশলী অমিত ধর (৩৮), রনি দাশ (৩৮), রাজীব দাস (৩২), কৃষ্ণ কুমার
দত্ত (৫২), জিকু চৌধুরী (৪০), নিউটন দে ববি (৩৮), তুষার চক্রবর্তী রাজীব (২৮), মিথুন
দে (৩৫), রুপন ধর (৩৫), রিমন দত্ত (২৮), সুকান্ত দাশ (২৮), বিশ্বজিৎ গুপ্ত (৪২), রাজেশ
চৌধুরী (২৮) এবং হৃদয় দাস (২৫)। একই মামলায় অজ্ঞাতনামা আরও ১৫ থেকে ২০ জনকে আসামি
করা হয়েছে।
মামলায় অভিযোগে বলা হয়েছে, ৫ অগাস্ট গণঅভুত্থানের
পর বৈষম্যবিরোধী ছাত্র-জনতা নিউমার্কেট মোড়ে একটি জাতীয় পতাকা উত্তোলন করে। গত ২৫ অক্টোবর
লালদীঘি ময়দানে সনাতনীদের সমাবেশের দিন ওই পতাকার ওপর ইসকনের গেরুয়া রঙের ধর্মীয় পতাকা
স্থাপন করে দেওয়া হয়, যা রাষ্ট্রের অখণ্ডতাকে অস্বীকার করার শামিল।
এজাহারে আরও বলা হয়েছে, জাতীয় পতাকার ওপর
ধর্মীয় পাতাকা উত্তোলন করে আসামিরা দেশের ভেতর অরাজক পরিস্থিতি সৃষ্টি করে দেশকে অকার্যকর
করার রাষ্ট্রদোহ কাজে লিপ্ত আছে।
দণ্ডবিধির ১২০(খ), ১২৪(ক), ১৫৩(ক), ১০৯
ও ৩৪ ধারায় মামলাটি দায়ের হয়।
মন্তব্য করুন