রিজভীর বক্তব্যে জামায়াতে ইসলামীর প্রতিবাদ
ছবি : সংগৃহীত
বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী দাবি করেন, ভারতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে শেখ হাসিনাকে ক্ষমা করতে চায় জামায়াত। তবে তার এই বক্তব্যকে ভিত্তিহীন, বিভ্রান্তিকর এবং রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে আখ্যায়িত করেছেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সহকারী সেক্রেটারি মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) এক বিবৃতিতে মাওলানা
রফিকুল ইসলাম খান বলেন, “বিএনপি নেতা রুহুল কবির রিজভী জামায়াতে ইসলামী সম্পর্কে ‘ভারতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে হাসিনাকে
ক্ষমা করতে চায় জামায়াত’ মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন, তা বিভ্রান্তিকর, ভিত্তিহীন ও রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
বিবৃতিতে তিনি আরও বলেন, রুহুল কবির রিজভী
জামায়াতে ইসলামীর দিকে ইঙ্গিত করে বলেছেন, ‘৫ আগস্টের পর একটি রাজনৈতিক দলের আত্মসাৎ দেখেছে জনগণ, কারা পায়ের রগ
কাটে তাদের চিনে জনগণ, ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করছে একাত্তরের বিরোধিতাকারী
জামায়াত।’ রিজভীর এ জাতীয় বক্তব্য বিগত কয়েক দশক যাবৎ প্রচার করা হচ্ছে। রগ কাটা,
ঘোলা পানিতে মাছ শিকার, ৭১ এর বিরোধিতা এ সব বক্তব্য জনগণ বহু পূর্বেই প্রত্যাখ্যান
করেছে। রিজভী জামায়াতের বিরুদ্ধে এসব কথা উচ্চারণ করে কী অর্জন করতে চান, তা জনগণের
কাছে স্পষ্ট নয়।’
বিবৃতিতে জামায়াতের সহকারী সেক্রেটারি
জেনারেল আরও বলেন, ‘জামায়াত রগকাটা ও ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের রাজনীতি কখনো করেনি। তিনি
(রিজভী) জামায়াতের দিকে ইঙ্গিত করে ‘ইসলাম নিয়ে রাজনীতি করেন, ইসলাম মানে তো বারবার মোনাফেকি করা না’ তার এই বক্তব্য চরম মিথ্যাচার
ছাড়া আর কিছু নয়। জামায়াত ‘ইসলাম’ নিয়ে রাজনীতি করে না। ইসলামী আদর্শের ভিত্তিতে রাজনীতি করে জামায়াত।
জামায়াতে ইসলামী কখনো মোনাফেকি করেনি। জামায়াত দেশের মানুষের অধিকার, আইনের শাসন, ন্যায়বিচার,
মানবাধিকার ও ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য আপসহীনভাবে লড়াই করেছে। জামায়াত কখনো মোনাফেকির
আশ্রয় নেয়নি।’
মাওলানা রফিকুল ইসলাম খান বিবৃতিতে বলেন,
‘রিজভী অবশ্যই
অবগত আছেন ২০১৮ সালে প্রতিষ্ঠিত জোটকে এড়িয়ে ভিন্ন মতের লোকদের সাথে জোট করে ক্ষমতায়
যাওয়ার জন্য যে ঐক্য করা হয়েছিল তা কী জাতির সাথে মোনাফেকি নয়? জনগণ এই রাজনৈতিক ছন্দ
পতনের ইতিহাস ভুলে যায়নি।’
তিনি ভারতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নে ‘শেখ হাসিনাকে ক্ষমা করতে চায় জামায়াত’ মর্মে যে বক্তব্য দিয়েছেন তাতে
জনগণ বিস্মিত। ভারতের সাথে সম্পর্ক উন্নয়নের বিষয়ে জামায়াতের প্রতি অভিযোগ উত্থাপনের
আগে জনাব রিজভীর আত্ম-পর্যালোচনা করা উচিত। কারা দলীয় টিম নিয়ে ভারত সফর করে ভারতের
সাথে সখ্যতা করার চেষ্টা করেছেন, তা জনগণ খুব ভালো করেই জানেন।
জামায়াতে ইসলামীর রাজনীতি ভারতের আধিপত্যবাদ
ও ফ্যাসিবাদের বিরুদ্ধে- এ কথা উল্লেখ করে এই জামায়াত নেতা বিবৃতি বলেন, ‘জামায়াতের এই ভূমিকা গোটা জাতি
গ্রহণ করেছে। আর এ কারণেই সম্ভবত রিজভীর গাত্রদাহ সৃষ্টি হয়েছে। আমরা এ ধরনের বিভ্রান্তিকর
ও অপবাদ আরোপের রাজনীতি থেকে বিরত থাকার জন্য সংশ্লিষ্ট সকলের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।’
মন্তব্য করুন