আসন্ন নির্বাচনে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসবে বিএনপি: এএফপি

বিএনপি
আগামী বছরের মার্চের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হলে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল (বিএনপি) জয়ী হতে পারে বলে ব্যাপকভাবে ধারণা করা হচ্ছে। বার্তা সংস্থা এএফপি-তে প্রকাশিত একটি প্রতিবেদনে এ কথা বলা হয়েছে।
প্রতিবেদনটি জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) আহ্বায়ক নাহিদ ইসলাম-এর দেওয়া
এক সাক্ষাৎকারের ভিত্তিতে তৈরি করা হয়েছে। এতে বলা হয়, নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে বিএনপি
ও এনসিপির মধ্যে বিরোধ দেখা দিয়েছে। বিএনপি মনে করে, যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচন আয়োজন
করে জনগণের ম্যান্ডেটপ্রাপ্ত সরকার গঠন করা উচিত।
নাহিদ ইসলাম গত বুধবার এএফপিকে সাক্ষাৎকার দেন এবং আজ শুক্রবার তা প্রকাশ
করা হয়েছে।
এএফপিকে তিনি বলেন, হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর আইনশৃঙ্খলা রক্ষা করতে
গিয়ে এখনো সমস্যার মুখে পড়ছে বাংলাদেশ। এমন পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আয়োজন করা সম্ভব
নয়। তিনি আরও বলেন, ‘আমাদের বিরুদ্ধে প্রায়ই নির্বাচন বিলম্বের
ষড়যন্ত্রের অভিযোগ তোলা হয়। তবে এটা সত্যি নয়।’
গত বছরের জুলাই-আগস্টে শেখ হাসিনার কর্তৃত্ববাদী শাসনের বিরুদ্ধে গণ-অভ্যুত্থানের
সবচেয়ে পরিচিত মুখগুলোর একটি নাহিদ ইসলাম। হাসিনা ক্ষমতাচ্যুত হওয়ার পর গঠিত অন্তর্বর্তী
সরকারে যোগ দেন তিনি। গত সপ্তাহে সরকার থেকে পদত্যাগ করেন নাহিদ। এরপর তাঁর নেতৃত্বে
আত্মপ্রকাশ হয় তরুণদের নতুন দল এনসিপির।
বাংলাদেশে সুদূরপ্রসারী সংস্কারের বিষয়ে রাজনৈতিক দলগুলোর আগ্রহে ঘাটতি
রয়েছে বলে মন্তব্য করেন নাহিদ ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এমনকি তরুণেরা
যে কারণে জীবন উৎসর্গ করেছেন, সেসব সংস্কারেও আগ্রহী নয় তারা।’ তিনি আরও বলেন,
‘গণ-অভ্যুত্থান
এবং এর পরবর্তী সময়ে আমরা যেসব প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলাম, তা বাস্তবায়নে আমাদের একটি বাধ্যবাধকতা
রয়েছে। এ কারণে আমরা একটি রাজনৈতিক দল গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম।’
নাহিদ ইসলাম মনে করেন, তিনি ও তাঁর দলের নেতারা যদি আগামী সরকার গঠন
করতে না-ও পারেন, তারপরও তাঁরা এমন একটি রাজনৈতিক শক্তির সূচনা করেছেন, যা আগামী কয়েক
দশক ধরে প্রভাব বজায় রাখবে। তিনি বলেন, ‘কেউই জানতেন না,
একটি অভ্যুত্থান হবে। তবে এটি হয়েছে। আমি আন্তরিকতার সঙ্গে আশা করি এবং বিশ্বাস করি
যে আমরা এবার বিজয়ী হতে চলেছি। তবে এই নির্বাচনই পৃথিবীর শেষ নয়...আমাদের লক্ষ্য হলো
এই শক্তিটাকে আরও ৫০ বা ১০০ বা বেশি বছর টিকিয়ে রাখা।’
পরবর্তী জাতীয় নির্বাচন কবে অনুষ্ঠিত হবে, তা নিয়ে বিএনপির সঙ্গে বিরোধ
সৃষ্টি হয়েছে এনসিপির। বিএনপির যুক্তি—জনগণের ম্যান্ডেটের
একটি সরকারকে ক্ষমতায় বসানোর জন্য যত দ্রুত সম্ভব নির্বাচনের আয়োজন করতে হবে।
জুলাই অভ্যুত্থানের চেতনা ধারণ করেন—এমন সব মতাদর্শের
মানুষের জন্য নিজেদের দলকে উন্মুক্ত রেখেছে এনসিপি। তবে গত মাসের প্রতিষ্ঠার পর দলের
অভ্যন্তরীণ কিছু বিষয় আলোচনার সৃষ্টি করেছে। দল গঠনের পর ডানপন্থীদের দাবির মুখে এনসিপির
কমিটি থেকে সমকামীদের অধিকার নিয়ে কাজ করা একজনকে সরিয়ে দেওয়া হয়।
নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা সবার অন্তর্ভুক্তিতে
বিশ্বাস করি। তবে ধর্মীয় এবং সাংস্কৃতিক রীতিনীতির কারণে সুনির্দিষ্ট কিছু সীমাবদ্ধতা
রয়েছে।’ এনসিপিতে এখনো
প্রশংসা করার মতো বৈচিত্র্য রয়েছে উল্লেখ করে নাহিদ ইসলাম বলেন, ‘আমরা (দলে) নারীদের
সামনে এনেছি এবং সব বর্ণ ও ধর্মের প্রতিনিধিদের অন্তর্ভুক্ত করেছি। সব নাগরিক যেন তাঁদের
অধিকার ভোগ করতে পারেন, আমরা সে চেষ্টা করব।’
মন্তব্য করুন