বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪ | ১৫ কার্তিক ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

যুদ্ধবিধ্বস্ত আফগানিস্তানে এত সম্পদ!

অনলাইন ডেস্ক
১৬ নভেম্বর ২০২০ ২০:২৭ |আপডেট : ১৯ এপ্রিল ২০২১ ২০:২৮
বিভিন্ন ধরনের খনিজসম্পদ
বিভিন্ন ধরনের খনিজসম্পদ

পৃথিবীর যে কয়টি দেশে সবসময়ই যুদ্ধ লেগে থাকে তার মধ্যে আফগানিস্তান অন্যতম। যুদ্ধের কারণে এ দেশটি অর্থনৈতিক দিক থেকে পৃথিবীর গরিব দেশগুলোর একটি। কিন্তু বিজ্ঞানীরা বলছেন দেশটিতে রয়েছে এক ট্রিলিয়ন ডলারের সম্পদ।

মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের জিওলোজিক্যাল সার্ভের (ইউএসজিএস) বরাত দিয়ে লাইভ সায়েন্স ম্যাগাজিন এ তথ্য জানিয়েছে।

প্রতিবেদনটিতে বলা হয়েছে, আফগানিস্তানের রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা থেকে তালেবানদের সরাতে ২০০৪ সালে মার্কিন বাহিনী অভিযান শুরু করে। এরপর দেশটিতে কী ধরনের খনিজসম্পদ রয়েছে তা খুঁজতে শুরু করে ইউএসজিএস। ২০০৬ সালে মার্কিন গবেষকরা আফগানিস্তানে যান। তারা দেশজুড়ে ম্যাগনেটিক, গ্র্যাভিটি ও হাইপারস্পেকট্রাল জরিপ পরিচালনা করেন।

এরিয়াল জরিপে বিজ্ঞানীরা দেখতে পান, দেশটির ভূমির নিচে ৬০ মিলিয়ন টনের মতো তামা থাকতে পারে। এছাড়াও ২ দশমিক ২ বিলিয়ন টন আকরিক লোহা ও ১ দশমিক ৪ মিলিয়ন টন দুর্লভ মাটি (ল্যানথানাম, সিরিয়াম ও নিওডাইমিয়াম) থাকতে পারে।

আফগানিস্তানের হেলমান্দ প্রদেশে দুর্লভ মাটিসমৃদ্ধ খানেশিন কার্বোনাইটের যে মজুদ রয়েছে শুধু তার মূল্যই ৮৯ বিলিয়ন ডলার।

মূল জরিপ প্রতিবেদনটিতে আরও বলা হয়েছে, যুদ্ধবিধ্বস্ত দেশটিতে বিপুল পরিমাণে অ্যালুমিনিয়াম, সোনা, রূপা, জিঙ্ক, পারদ ও লিথিয়াম থাকতে পারে।

ইউএসজিএসের আফগানিস্তান প্রকল্পের প্রোগ্রাম ম্যানেজার জ্যাক মেডলিন ও স্বীকার করেছেন আফগানিস্তান খনিজসম্পদের দিক থেকে খুবই খুবই সমৃদ্ধ একটি দেশ।

ইউএসজিএসের কাছ থেকে এমন তথ্য পেয়ে আফগানিস্তানের প্রতি আগ্রহ দেখায় যুক্তরাষ্ট্রের ডিপার্টমেন্ট অব ডিফেন্সস টাস্ক ফোর্স ফর বিজনেস অ্যান্ড স্ট্যাবিলিটি অপারেশনস। তারা আফগানিস্তান পুনর্গঠনের কাজে হাত দেয়।

এই টাস্ক ফোর্সের মতে আফগানিস্তানে ৯০৮ বিলিয়ন ডলার খনিজসম্পদ রয়েছে। তবে আফগান সরকারের হিসাবে এর মূল্য ৩ ট্রিলিয়ন ডলার।

এদিকে নিজের দেশের খনিজসম্পদের এমন প্রাচুর্যের খবর পেয়ে আফগান সরকার চীনের মেটালুরজিক্যাল নামে একটি গ্রুপের সঙ্গে ৩০ বছরের চুক্তি পাকা করেছে। তিন বিলিয়ন ডলার মূল্যের এই চুক্তির মাধ্যমে বেইজিং-ভিত্তিক এই খনিজসম্পদ আহরণ সংস্থাটি মেস আয়নাক তামার খনিতে সম্পদ আহরণের কাজ করবে।

এছাড়াও, আফগানিস্তানের লেহার সবচেয়ে বড় আকরিক খনিতে সম্পদ আহরণের কাজ দেওয়া হয়েছে ভারতের একটি সরকারি সংস্থা ও বেসরকারি কয়েকটি প্রতিষ্ঠানকে।

তবে সংশ্লিষ্টরা মনে করছেন, সুসংহত ও সুসমন্বিত কৌশল গ্রহণ করা না হলে আফগানিস্তান তার খনিজ সম্পদের এই বিশাল মজুদের সুবিধা থেকে বঞ্চিত হবে। এমনকি এ সম্পদ দেশটির জাতীয় নিরাপত্তার জন্যে হুমকি হয়েও উঠতে পারে।



মন্তব্য করুন