সহিংসতা-প্রাণহানির দায়ে হাসিনাকে জবাবদিহিতার মুখোমুখি দেখতে চায় জাতিসংঘ
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক
ছাত্র-জনতার ২৩ দিনের দেশ কাঁপানো আন্দোলনে পতন হয় আওয়ামী লীগ সরকারের। ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানের মুখে গত ৫ আগস্ট রাষ্ট্রপতি মো. সাহাবুদ্দিনের কাছে প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগপত্র জমা দেন শেখ হাসিনা। এরপর গণভবন থেকেই হেলিকপ্টারে দেশ ছাড়েন। সে সময় তার সঙ্গে ছিলেন তার বোন শেখ রেহানা। বর্তমানে তিনি ভারতে রয়েছেন।
২৩ দিন হত্যা ও সহিংসতা চালানোর দায়ে সদ্য ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাসহ জড়িতদের জবাবদিহির মুখোমুখি দেখতে চায় জাতিসংঘ। জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র স্টিফেন ডুজারিক মঙ্গলবার এক প্রেস ব্রিফিংয়ে এমন কথা জানিয়েছেন।
বাংলাদেশ স্থিতিশীলতার দিকে যাচ্ছে। কঠিন এ সময়ে এই দেশকে সমর্থন দেওয়ার কথা জানিয়েছে জাতিসংঘ। তবে যারা ৮১৯ জন মানুষকে হত্যা এবং ২৫ হাজার মানুষকে আহত করার জন্য দায়ী তাদের বিচারের আওতায় আনার বিষয়ে জাতিসংঘ মহাসচিব কি কিছু বলেছেন? তাদের অধিকাংশই গুলি বা স্বৈরশাসক শেখ হাসিনার দেখামাত্র গুলি করার নির্দেশে হতাহত হয়েছেন এক সাংবাদিকের এমন প্রশ্নের জবাবে জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, আমরা এই বিশেষ সংকটের শুরু থেকেই জবাবদিহির কথা বলে আসছি। সহিংসতা, প্রাণহানি এবং মানবিক ও রাজনৈতিক অধিকার লঙ্ঘনের জন্য জবাবদিহির দরকার রয়েছে।
অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে জাতিসংঘের মহাসচিবের আন্তোনিও গুতেরেসের দেওয়া একটি চিঠির বিষয়ে তিনি বলেন, আমি মহাসচিবের পাঠানো একটি চিঠি সম্পর্কে কিছু প্রশ্ন পেয়েছি। আমি আপনাকে বলতে পারি যে, বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে একটি অভিনন্দনপত্র লিখেছেন গুতেরেস।
স্টিফেন ডুজারিক বলেন, চিঠিতে মহাসচিব বাংলাদেশে শান্তি ফেরানো এবং সংসদ নির্বাচন আয়োজনের প্রচেষ্টাকে স্বাগত জানিয়েছেন। মহাসচিব বলেছেন যে, জাতিসংঘের প্রত্যাশা ড. ইউনূসের সরকার একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক পন্থা গ্রহণ করবে, যার মধ্যে তরুণদের পাশাপাশি নারী, সংখ্যালঘু ও আদিবাসী সম্প্রদায়ের কণ্ঠস্বরও বিবেচনা করা হবে।
জাতিসংঘ মহাসচিবের মুখপাত্র বলেন, দেশের সব নাগরিক, বিশেষ করে সংখ্যালঘুদের পূর্ণ সুরক্ষা নিশ্চিত করতে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের ওপর ভরসা করছেন গুতেরেস। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের মঙ্গল নিশ্চিত করতে ড. ইউনূসের প্রতি জোরালো আহ্বান জানিয়েছেন মহাসচিব, বিশেষ করে মিয়ানমারের অবনতিশীল পরিস্থিতির পরিপ্রেক্ষিতে।
মন্তব্য করুন