বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪ | ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বঙ্গাব্দ

বুশরা বিবিকে ‘সন্দেহ’ করছেন পিটিআই নেতারা!

অনলাইন ডেস্ক
২৭ নভেম্বর ২০২৪ ১৯:৫০
বুশরা বিবি
বুশরা বিবি

নিরাপত্তা বাহিনীর ব্যাপক দমন-পীড়নের মুখে কারাবন্দি সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে ইসলামাবাদের বিক্ষোভ প্রত্যাহার করেছে পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ (পিটিআই)।

বুধবার ভোরে খাইবার পাখতুনখাওয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর এবং ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবিসহ দলের নেতারা বিক্ষোভস্থল ত্যাগ করেন। যদিও তিনি গতকাল বলেছিলেন, ইমরান খানকে মুক্ত না করে তিনি বাড়ি ফিরবেন না।

জিও নিউজ জানিয়েছে, এবারের আন্দোলনে ইমরান খানের স্ত্রী বুশরার নেতৃত্ব নিয়ে পিটিআইয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে। দলে তার একক সিদ্ধান্তে অনেকে হতাশাও প্রকাশ করেছেন।

দ্য নিউজ এডিটর ইনভেস্টিগেশন আনসার আব্বাসির প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, পিটিআই নেতা ব্যারিস্টার গহর ও ব্যারিস্টার সাইফকে হাসান আবদালে গিয়ে ডি চকের দিকে মিছিল না করতে রাজি করানোর জন্য একটি হেলিকপ্টারও দেওয়া হয়েছিল।কিন্তু তারা যখন হাসান আবদালে পৌঁছান, ততক্ষণে মিছিলটি ইসলামাবাদের দিকে অগ্রসর হয়ে গেছে।

সূত্র জানিয়েছে, পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী মহসিন নাকভি পিটিআই নেতাদের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছিলেন। মহসিন নাকভি আলী আমিন গান্দাপুর এবং ওমর আয়ুবের সঙ্গে কথা বলেছিলেন তবে তাদেরও অসহায় বলে মনে হয়েছিল।

সূত্রের খবর, আন্দোলনে সম্পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ ছিল বুশরা বিবির।মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর বুশরা বিবির পেশোয়ার থেকে পদযাত্রায় যোগ দেওয়ার পক্ষে ছিলেন না।

ওয়াকিবহাল মহলের দাবি, ডি চকে যাওয়া নিয়ে বুশরা বিবি ও আলি আমিন গান্দাপুরের মধ্যে বচসাও হয়েছিল।

গত রাতে ইসলামাবাদ পুলিশ পিটিআই কর্মীদের বিরুদ্ধে ব্যাপক অভিযানের ঘোষণা দেয়। ফলে পিটিআই নেতা-কর্মীরা রাজধানী ছেড়ে যেতে বাধ্য হন।

বুশরা বিবি এবং খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপুর ইসালামাবাদে পুলিশের অভিযানের পরে একই গাড়িতে খাইবার পাখতুনখোয়ায় পালিয়ে গেছেন বলে জানা গেছে।

খাইবার পাখতুনখোয়া বিধানসভার স্পিকার বাবর সালিমের ভাই তৈমুর সালিম জিও নিউজকে জানিয়েছেন, খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর ইসলামাবাদ থেকে মানসেহরায় পৌঁছেছেন।

তৈমুর সালিম খান জানিয়েছেন, আলি আমিন গান্দাপুর, বুশরা বিবি এবং ওমর আয়ুব খাইবার পাখতুনখোয়া প্রদেশ বিধানসভার স্পিকার বাবর সালিমের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন।

সূত্রের খবর, খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলি আমিন গান্দাপুর ও বুশরা বিবি মানসেহরায় সার্কিট হাউস রাতভর অবস্থান করেন।

পাকিস্তানের সাবেক সাংবাদিক এবং বর্তমানে পিটিআইয়ের জ্যেষ্ঠ নেতা শওকত আলী ইউসুফজাই বুধবার জিও টিভিকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে বলেছেন, বিক্ষোভ কর্মসূচিতে পিটিআইয়ের হাইকমান্ড দলকে যথাযথভাবে নেতৃত্ব দিতে ব্যর্থ হয়েছেন।

সাবেক প্রধানমন্ত্রী ও দলের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ইমরান খানের মুক্তি, সরকারের পদত্যাগ এবং সংবিধানের ২৬তম সংশোধনী বাতিলের দাবিতে গত ২৪ নভেম্বর ইসলাসাবাদ অভিমুখে রওনা দেন পিটিআইয়ের বিভিন্ন স্তরের নেতাকর্মী ও সমর্থকরা। মঙ্গলবার তারা ইসলামাবাদের গুরুত্বপূর্ণ এলাকা ডি-চকে এসে পৌঁছে বিক্ষোভ-প্রতিবাদ শুরু করেন।

সেখানে পুলিশ ও পাকিস্তানের সীমান্তরক্ষী বাহিনী রেঞ্জার্সের সংঘাত শুরু হয় তাদের। এতে পুলিশ-রেঞ্জার্স এবং পিটিআইয়ের মোট ৬ জন নিহত হন। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রাখতে অবশ্য আগে থেকেই রাজধানীতে সেনা মোতায়েন করেছিল সরকার।

ইসলামাবাদের রেড জোন এবং ডি চকে পৌঁছানোর পর পুলিশ, রেঞ্জার্স এবং সেনা সদস্যদের হাতে ব্যাপক ধরপাকড়ের শিকার হন পিটিআইয়ের নেতাকর্মীরা। এই ধরপাকড়ের এক পর্যায়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান এই আন্দোলন কর্মসূচির শীর্ষ দুই নেতা খাইবার পাখতুনখোয়ার মুখ্যমন্ত্রী আলী আমিন গান্দাপোর এবং ইমরান খানের স্ত্রী বুশরা বিবি।

জিও টিভিকে শওকত ইউসুফজাই বলেন, বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আলী আমিন গান্দাপোর ব্যাতীত সেভাবে আর কোনো জ্যেষ্ঠ নেতার উপস্থিতি দেখা যায়নি। এছাড়া দলের মূল নেতা যারা, অর্থাৎ গওহর আলী খান, সালমান আকরাম রাজা, শের আফজাল মারওয়াত কাউকে এ কর্মসূচিতে দেখা যায়নি। সরকার পিটিআইকে আলোচনার জন্য ডেকেছিল; কিন্তু কী কারনে সেই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে বিক্ষোভ কর্মসূচি ঘোষণা করা হলো, তা আমি এখনও জানি না।



মন্তব্য করুন